রাঙ্গামাটির কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে খুলে দেওয়া হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়ে বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯০০০ কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে।
পানি ছাড়ার আগেই ‘জরুরি বার্তা’ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনীর কাপ্তাই ও চট্টগ্রাম ঘাঁটি এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে খুলে দেওয়ার আগে সকাল ৭টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮.২৭ মিনস সি লেভেল রেকর্ড করা হয়, যা বিপদসীমায় পৌঁছেছে। হ্রদের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ মিনস সি লেভেল । গেইট খুলে দেওয়ায় এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে স্পিলওয়ের গেটের খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
তবে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের গণমাধ্যমকে জানান, এতে করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই।
দ্রুত সময়ে যদি কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়া না হয়, তাহলে কাপ্তাই বাঁধ হ্রদ-সংলগ্ন অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।
এদিকে স্পিলওয়ের গেট খুলে দেওয়ার খবরে স্থানীয়রা যেন আতঙ্কিত না হন সেজন্য আশেপাশের ভাটি অঞ্চল যেমন রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
তাদের বলা হচ্ছে, নদী তীরবর্তী মানুষেরা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে যান, এর বাহিরে সবাই সতর্ক থাকবেন, আতঙ্কিত হবেন না।
প্রসঙ্গত: এর আগে, শুক্রবার হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। সেতুর পাটাতনের ছয় ইঞ্চি উপর পর্যন্ত পানি উঠেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পানির চাপে অনেক স্থানে পাটাতনের কাঠ খুলে গিয়েছে। এ কারণে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ করেছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
গত এক সপ্তাহের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা বা বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যায়।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম।
তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দৈনিক পাঁচটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যদিও বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সর্বোচ্চ ২৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।
বিএনএনিউজ, শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচমুন্নী