বিএনএ, চট্টগ্রাম : অল্প বৃষ্টিতে ডুবে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল। সকালে যারা কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হন তারা পড়েন বিপদে। কোথাও কোথাও হাটু সমান পানি পার হয়ে তাদের ছুটতে হয়েছে কর্মস্থলে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
নিচে জলজট উপরে যানজট
বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে চকবাজার, প্রবর্তক, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক, গোসাইলডাঙ্গা, শান্তিবাগ, হালিশহর, চান্দগাঁও, বাকলিয়াসহ নগরের নিচু এলাকায় কোথাও কোমর পানি আবার কোথাও হাঁটু পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
বহদ্দারহাট থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে সকাল থেকে লেগে ছিল তীব্র যানজট। আর নিচে এশিয়ান হাইয়েতে বহদ্দারহাট থেকে ষোলশহর ২নং গেইট পর্যন্ত ছিল কোমরসম পানি। অনেক যানবাহনকে ইঞ্জিনে পানি ঢুকে সড়কে ডুবে থাকতে দেখা গেছে। ফলে বহদ্দারহাট থেকে জিইসি, লালখানবাজার হয়ে আগ্রাবাদগামি সড়কে যানবাহনগুলো সকাল থেকে চলাচল বন্ধ ছিল।
বৃষ্টিতে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম শহর
ব্যাংক কর্মকতা আকরাম বলেন, অফিসে যাওয়ার জন্য বহদ্দারহাট বাসা থেকে বের হয়ে দেখি রাস্তায় অনেক পানি। গণপরিবহনগুলোও আটকা পড়েছে। রাস্তায় যানজট। রিকসাগুলোও অনেক বেশি ভাড়া নিচ্ছে। অফিসে কতক্ষণে পৌঁছবো বলতে পারছি না।
বহদ্দারহাট থেকে চকবাজার রোডে অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। এর মধ্যে হাঁটতে থাকা নুর উদ্দিন জানান, আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে যাওয়ার জন্য এসেছি। সেখানে অসুস্থ মা ভর্তি আছেন। গাড়ি না পেয়ে বাচ্চাকে কাঁধে নিয়ে হেঁটেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেতেতো হবে।
চকবাজার এলাকার বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন জানান, প্রতিবছর বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের নিচু এলাকা ডুবে যাওয়ায় অনেক সাধারণ মানুষ যারা নিচতলায় বসবাস বা দোকানপাট ব্যবসা করেন তারা বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যারা স্থানীয় কোথাও যাবার কোন উপায় নেই, তাদের অবস্থা হয় অবর্ণনীয়।
আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কের বেহাল অবস্থা
ছবিটি বুধবার বিকেলে তোলা
আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কে পানি জমে যাওয়ায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সকালে দেওয়ান হাট এলাকা হতে আগ্রাবাদ বাদামতলী পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক পার হতে এক ঘন্টা লেগে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফ্লাইওভার বা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ চলার কারণে শেখ মুজিব সড়কের বেহাল অবস্থা। রাস্তা কর্দমাক্ত, পানিতে ডুবে আছে, পথচারী হাঁটার মত ফুটপাতও নেই। তারা বলেন, ফ্লাইওভার বা এক্সপ্রেসওয়ে যারা নির্মাণ করছেন তাদের উচিত মানুষের দুর্ভোগ কমাতে জোড়াতালি দিয়ে হলেও সড়ক যান চলাচল ও পথচারী চলাচলের ফুটপাত তৈরি করে দেয়া। অথচ এটি চট্টগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। অধিকাংশ মানুষ এ সড়ক দিয়ে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, বন্দর, কাস্টমস, সিইপিজেড ও বিমান বন্দরে যাতায়াত করেন।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ও আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে চট্টগ্রামে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
বিএনএনিউজ/এইচ,এম।