বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক: চীন সরকারের কম্পিউটার হ্যাক করে সংগ্রহ করা তথ্যে দেশটির প্রত্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের আটককেন্দ্রে রেখে নির্যাতনের গোপন প্রক্রিয়া সামনে এসেছে।
নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা নথিগুলো থেকে দেখা গেছে, দেশটির সংখ্যালঘু উইঘুর এবং টার্কিক সম্প্রদায়ের মানুষদের ইসলামী ধর্মবিশ্বাসের কোনো রকম চিহ্ন দেখা গেলে তাদের দীর্ঘ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ওই এলাকার পুলিশের কম্পিউটার সার্ভার হ্যাক করে জোগাড় করা বিশাল এই তথ্যভাণ্ডারে রয়েছে, শিনজিয়াংয়ের চূড়ান্ত গোপনীয় পদ্ধতির একেবারে কেন্দ্রে থাকা হাজার হাজার ফটোগ্রাফ এবং আটক কেন্দ্র থেকে পালানোর চেষ্টা করলেই গুলি করে হত্যার নীতি বিষয়ক নানান সাক্ষ্যপ্রমাণ।
ফাঁস হওয়া কিছু কিছু ছবিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যাচ্ছে বন্দিদের মাথায় কালো হুড এবং শরীরে শেকল বেঁধে নতি স্বীকারে বাধ্য করার কৌশল প্রয়োগ করতে।
২০২২ সালের শুরুর দিকে শিনজিয়াং পুলিশ ফাইল নামে পরিচিত ওইসব নথি ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির কাছে দেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস ধরে এই সব নথির সত্যতা যাচাই ও অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে এসেছে ওই এলাকায় উইঘুর এবং টার্কিক সম্প্রদায়ের মানুষদের ধর্ম ও সংস্কৃতির যে কোনোরকম চিহ্ন দেখলেই তাদের বন্দি করার প্রক্রিয়া নিয়ে ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ নানান তথ্য। ওইসব তথ্য আদানপ্রদানের প্রক্রিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়েরও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
এমন এক সময় এসব গোপন এসব দলিল প্রকাশ করা হলো যখন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট চীনের শিনজিয়াং সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এক বিবৃতিতে চীন সরকার বিবিসিকে বলেছে, চীন সরকার সন্ত্রাস দমন পদক্ষেপ নেবার ফলে শিনজিয়াংয়ে যে শান্তি ও সমৃদ্ধি এসেছে তা সব রকম ‘মিথ্য প্রচারণার’ সবচেয়ে ভাল জবাব।
চীন সরকার দাবি করে যে শিনজিয়াং জুড়ে ২০১৭ সালে এই সংশোধন কেন্দ্রগুলো তৈরি করা হয় এবং তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এগুলো নিছকই স্কুল। কিন্তু হ্যাক করা দলিলে অভ্যন্তরীণ পুলিশ বাহিনীর প্রতি নির্দেশ, রক্ষীদের ডিউটির সময় এবং বন্দিদের অবস্থার যেসব ছবি প্রথমবারের মতো সামনে এসেছে তাতে এগুলোকে নিছক স্কুল বলা চলে না।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ