30 C
আবহাওয়া
৫:২৮ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১২ (নীলফামারী-১)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১২ (নীলফামারী-১)


বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রকাশ করছে। আজ থাকছে নীলফামারী-১ আসনের হালচাল।

নীলফামারী-১ আসন 
নীলফামারী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলা। নীলফামারী জেলার উত্তর সীমান্তে ভারতের জলপাইগুড়ি এবং অন্যদিকে লালমনিরহাট, রংপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলা অবস্থিত। এ জেলার ৪টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারী-১ সংসদীয় আসনটি ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১২ নাম্বার আসন।

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শামশুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর-১২ নামে পরিচিত ছিল। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ২৫ হাজার ১ শত ৪০ জন। ভোট প্রদান করেন ৬৫ হাজার ২ শত ১৮ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শামশুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬১ হাজার ২ শত ৬৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ন্যাপ ভাসানীর আনোয়ার হোসেন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ২ হাজার ৯ শত ৫৫ ভোট।

দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি প্রার্থী মশিউর রহমান 

১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি পরিচিত হয় রংপুর-১ নামে। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৭শত ৩২ জন। ভোট প্রদান করেন ৭৩ হাজার ৬ শত ৮৩ জন । বিএনপি প্রার্থী মশিউর রহমান বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৮ হাজার ৮ শত ৩৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুর রহমান চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১৩ হাজার ৮ শত ৯০ ভোট।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির শফিকুল গনি বিজয়ী

১৯৮৬ সালের ৭মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১ আসনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়, নীলফামারী-১। নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৪ হাজার ৭ শত ৫৫ জন। জাতীয় পার্টির শফিকুল গনি বিজয়ী হন।। তিনি পান ৬৫ হাজার ৫ শত ৫১ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুর রউফ। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৮ হাজার ৩ শত ৩০ ভোট। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বেগম মনসুরা মহিউদ্দিন  নির্বাচিত

১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ পরিচিত রাজনৈতিক দল গুলো অংশগ্রহণ করেনি। প্রতিদ্বন্দ্বীতাবিহীন এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বেগম মনসুরা মহিউদ্দিন বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৭৪ হাজার ৬ শত ৭৫ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী নুরুন নবী দুলাল। কুড়াল প্রতীকে তিনি পান ২১ হাজার ৬ শত ৫৮ ভোট।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আব্দুর রউফ বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১০ হাজার ৫ শত ৯৫ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৯ শত ৩৬ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আব্দুর রউফ বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪১ হাজার ২ শত ১৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির নুর কুতুব আলম চৌধুরী। তিনি পান ৪০ হাজার ৪ শত ৯২ ভোট।

সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এন.কে আলম চৌধুরী 

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৩ হাজার ৬ শত ৫১ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৫ শত ১৮ জন। নির্বাচনে এন.কে আলম চৌধুরী বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৬০ হাজার ৪ শত ৪৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুর রউফ। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৭ হাজার ৮ শত ৩৩ ভোট।

YouTube player

অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ডাক্তার হামিদা বানু শোভা নির্বাচিত

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬ শত ১৭ জন । ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯ শত ৮৭ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডাক্তার হামিদা বানু শোভা বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬৬ হাজার ৮ শত ৭১ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির এন.কে আলম চৌধুরী। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৬৫ হাজার ৫ শত ৫২ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির জাফর ইকবাল সিদ্দিকী

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৮৮ হাজার ৪ শত ৭৪ জন । ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ২ শত ১৬ জন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জাফর ইকবাল সিদ্দিকী বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬ শত ৫৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রফিকুল ইসলাম। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৭ হাজার ১ শত ৮০ ভোট।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন সরকার বিজয়ী 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-১ আসনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭ শত ৮৫ জন । ভোট প্রদান করেন ৯৯ হাজার ১ শত ৭৯ জন । নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন সরকার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮০ হাজার ৪ শত ৩০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির জাফর ইকবাল সিদ্দিকী। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১৫ হাজার ৮ শত ৪৮ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী আসনে আফতাব উদ্দিন সরকার বিজয়ী 

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী আসনে প্রার্থী ছিলেন ৮ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন সরকার, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির রফিকুল ইসলাম, লাঙ্গল প্রতীকে জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, মই প্রতীকে বাসদের ইউনুস আলী, টেলিভিশন প্রতীকে বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এর সিরাজুল ইসলাম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সাইফুল ইসলাম, খেজুরগাছ প্রতীকে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের মনজুরুল ইসলাম, গাভী প্রতীকে ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ পার্টি বাংলাদেশ ন্যাপ এর জেবেল রহমান গানি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন সরকার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭ শত ৮৪ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির রফিকুল ইসলাম।ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৮৮ হাজার ৭ শত ৯১ ভোট।কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রথম, পঞ্চম, অষ্টম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, তৃতীয় চতুর্থ, সপ্তম ও নবম সংসদে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
জাতীয় সংসদের ১২ নম্বর আসন নীলফামারী-১ এ আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রতিনিধিত্ব করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা তেমন মজবুত নয়। একই অবস্থা বিএনপি ও জাতীয় পার্টিরও। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে নীলফামারী-১ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মধ্যে ত্রিমূখী লড়াই হবে।

বিএনএ/ শিরীন, ওজি , ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ