বিএনএ, সাভার: ধামরাইয়ে প্রশাসনের কঠোরতার অভাবকে পুঁজি করে অবৈধ শতাধিক ইটভাটার রমরমা ব্যবসা চলছে বছরের পর বছর। সুস্থ সুন্দর পরিবেশের জন্য এসব ইটভাটা এখন গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস করে চলছে এসব ইটভাটা। শুধু তাই নয় উপজেলার আঞ্চলিক রাস্তাগুলোর মাটি কাটার ফলে বৈদ্যুতিক প্রায় সব খুঁটিই ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় আঞ্চলিক রাস্তার পাশে যেসব ইটভাটা রয়েছে তারা প্রত্যেকেই রাস্তার ক্ষতি করে রমরমা মাটি ও ইটভাটার ব্যবসা করে যাচ্ছে। কালামপুর-সাটুরিয়া, কাওয়ালিপাড়া-বালিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে প্রায় প্রতিটি বিদ্যুতের খুঁটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হেলে রয়েছে। ঘটতে পারে যে কোনো সময় বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব অবৈধ ইটভাটা ও মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। রয়েছে ইউনিয়ন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবিতে।
একদিকে সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছে উপজেলাকে আধুনিক উপজেলায় পরিণত করবে। আবার অপরদিকে তারাই সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস করে অবৈধভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমির মাটি।
অবৈধ মাটি ব্যবসার জন্যই প্রতি বছর ঘটে যাচ্ছে হতাহতের ঘটনা। গত বছরও প্রায় ১০ জন মারা গেছে এই ইটভাটা ও মাটি ব্যবসায়। কিছুদিন আগেও কাওয়ালিপাড়া-সাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কে চলন্ত সিএনজির ওপর বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে ইমরুল কাউসার (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস করে এভাবে যদি দিনের পর দিন অবৈধ মাটি ও ইটভাটার ব্যবসা চলতে থাকে তাহলে ধামরাই উপজেলার মানচিত্র জলাশয়ে পরিণত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, রাস্তার ক্ষতি যারা করছে তারা সরকার দলীয় লোক। এদের বিরুদ্ধে কিছু বললে বাড়িতে থাকতে পারবো না। ধামরাইয়ে যত ইটভাটার ব্যবসা ও মাটি কাটা দেখছেন তার সবই প্রায় আওয়ামী লীগের নেতারা করতেছে। কিছু বললে হুমকি ধামকি দেয় আর বলে রাস্তাঘাট তো আমরাই ঠিক করে দেই। তাই কিছু বলি না।
এ বিষয়ে কুশুরা পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আব্দুল আল নোমান বলেন, যেসব ইটভাটা বিদ্যুতের খুঁটি গুলোর নিচে থেকে মাটি কেটে নিয়েছে তাদের মাটি ভরাট করে দিতে বলেছি। এতে সময়ক্ষেপণ করলে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবো।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরাফাত সাকলাইন বলেন, ভাটার মালিকের সাথে কথা হয়েছে। রাস্তার পাশ মাটি দিয়ে ভরাট করে দিবে। যদি না দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনএ/ ইমরান খান, ওজি