বিএনএ, মিয়ানমার ডেস্ক : জান্তা সরকার বিরোধী আন্দোলন ইয়াঙ্গুনে কিছুটা কমে আসলেও মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে কেন্দ্রীয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখিন এখন। দেশটির পূর্বাঞ্চলে গত কয়েকদিনের তীব্র সংঘর্ষে ২০জনের বেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত, বেশ কয়েকটি থানা ও সেনা ক্যাম্প পুড়িয়ে দিয়েছে সরকার বিরোধীরা।
কেন্দ্রীয় সেনা বাহিনী কাচিন,চিন, শান ও কায়াহ প্রদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে ব্যাপক ধর পাকড় ও গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার চালায়। এতে ক্ষুব্ধ আঞ্চলিক সরকার বিরোধী গ্রুপগুলো সেনা ও পুলিশের ওপর চোরাগুপ্তা হামলা চালালে উভয়পক্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
শনিবার শান ও কায়াহ প্রদেশে সরকার বিরোধী সশস্ত্র গ্রুপ পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের হামলায় মোবাই শহরে কমপক্ষে ১৩জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয় বলে দাবি করেছে স্থানীয় পত্রিকা ইরাবতি।
ভিডিওতে দেখা যায়, সংঘর্ষের পর সেখানে থানার যানবাহনগুলো আগুনে জ্বলতে থাকে।দি প্রগ্রেসিভ কারেননি পিপলস ফোর্স জানায় মোবাই শহরের ঘটনায় তাদের একজন সদস্য নিহত ও অপর একজন আহত হয়েছে।
এ অঞ্চলে ক্ষুদ্র জাতি সমূহ স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে চার দশক ধরে সশস্ত্র লড়াই করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।মোবাই শহরটি মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদ থেকে প্রায় ১০০ কি.মি. পূর্বে অবস্থিত।
কাচিন ও চিন প্রদেশেও গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সাথে সরকার সমর্থিত সেনা সদস্যদের সংঘর্ষ চলছে।অসর্থিত সূত্র জানায়,সেখানে ৭-১০জন সেনা সদস্য চোরাগুপ্তা হামলায় নিহত হয়। প্রতিবেশি চীন এবং চিন প্রদেশের মিউস সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ ঘটতে থাকলে বহু স্থানীয় বাসিন্দা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। অন্যান্য প্রদেশেও বহু লোক বাস্তচ্যুত হয়েছে।
মিয়ানমারে জান্তা সরকার বিরোধী জাতীয় ঐকমত্যের পাল্টা সরকারে বিভিন্ন প্রদেশের রাজনৈদিক দল, সশস্ত্র গ্রুপগুলো যোগ দিয়েছে।প্রদেশগুলোর সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপগুলো নির্বাচিত সরকারের সাথে থাকা অস্ত্র বিরতি চুক্তি অমান্য করে জান্তা ঠেকাও আন্দোলন করছে।
১লাখ ২৫হাজার শিক্ষক বরখাস্ত
সরকার বিরোধী গণ আন্দোলনে যোগ দেয়ায় কয়েকশত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করার পর এবার ১লাখ ২৫হাজার সরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে জান্তা সরকার।মিয়ানমার টিচার ফেডারেশন রোববার এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে আরও ৯০০ শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে জান্তা সরকার।
শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, হাসপাতাল কর্মী, ব্যাংক কর্মীরা সরকার বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়ায় দেশটির বহু স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ব্যাংক কর্মী সংকটে বন্ধ হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু হাসপাতাল সরকার সেনা বাহিনীর লোক দিয়ে পরিচালনা করছে।
The Assistance Association for Political Prisoners activist group রোববার জানায়, এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও শারিরীক নির্যাতনে ৮১৫জন নিহত হয়েছে।
অবশ্য জান্তা সরকারের মূল নেতা মিন অং হ্লা শনিবার জানান, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৪৭পুলিশসহ ৩০০ লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। এএ পিপিজি দাবি করেছে, অংসান সুচিসহ ৪হাজার ৩০০লোককে গ্রেফতার করেছে জান্তা সরকার।
মিন অং হ্লা বলেন, অংসান সূচি সুস্থ আছেন, শিগগির(সোমবার)তাকে আদালতে দেখা যাবে।সূত্র: মিয়ানমার নাও, স্ট্রেইটটাইমস-সাউথ ইস্ট এশিয়া সংস্করণ।
বিএনএনিউজ২৪/এসজিএন