বিএনএ, নোবিপ্রবি: কেক কাটা, আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুরুতে এক আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে অডিটোরিয়ামে ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামের আইকিউএসি সেমিনার কক্ষে ‘বিশ্ব গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’
শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আজগর হোসাইনের সঞ্চালনায় ও সভাপতি রাহি রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন, নোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা সাহানা রহমান। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দিব্যদ্যুতি সরকার।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভায় স্বাগত বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের। সভায় উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নোবিপ্রবি প্রেসক্লাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সমস্যা ও সম্ভাবনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ডিজিটাল মিডিয়ায় তুলে ধরে আসছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছে’।
সভায় নোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা সাহানা রহমান বলেন, ‘সাংবাদিকদের যে মূলনীতি, ‘সততা, অনুসন্ধিৎসা এই ব্যাপারগুলো সামনে রেখে কাজ করে যেতে হবে। কোনো ধরণের অর্ধসত্য বা মিথ্যা খবরকে আমরা যেন প্রশ্রয় না দেই। আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করতে হবে এবং তার সঠিক চর্চা করতে হবে।’
অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন তার বক্তৃতায় বলেন, ‘সমাজের দর্পণ হলো সংবাদপত্র। সাংবাদিকদের তাদের কাজের জন্য সম্মান জানানো উচিত। আর সাংবাদিকদের উচিত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ তুলে ধরা’।
সভার মূখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. দিব্যদ্যুতি সরকার তার আলোচনায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিশ্ব গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাক বাহিনীর কাছে গ্রেফতারের পূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তখনই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু গুরুত্ব পান। এরপর কিছুদিন গুরুত্ব পায় গণহত্যা এবং শরণার্থীদের খবরগুলো।
তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জাতীয়তাবাদ, বাঙালির জাতীয়তাবাদ হলো বিনম্র, শোভন ও শুভ্র। এসবের প্রতি যেন আমাদের আনুগত্য থাকে। যা আমাদের, আমাদের রাষ্ট্রকে উন্নত করবে এবং শুভ পথে অগ্রসর করবে’।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশ্বমিডিয়া যখনই নিউজ করেছে নিউজের চেষ্টা করেছে তখন বঙ্গবন্ধু যতটা সম্মানিত হয়েছেন তার চেয়ে বেশি সম্মানিত হয়েছে ওই গণমাধ্যমগুলো। কারণ বঙ্গবন্ধু ওই উচ্চতার একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কাজ আমাদের জন্য অনুসরণীয়। তিনি একটি জাতি এবং একটি দেশ উপহার দিয়েছেন। তাকে শ্রদ্ধার সাথে আমাদের স্মরণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ নোবিপ্রবি প্রেসক্লাব আরো এগিয়ে যাক।
উল্লেখ্য, ‘সত্য প্রকাশে মোরা নির্ভীক’ স্লোগানে ২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও অসাম্প্রদায়িক সাংবাদিক সংগঠন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের যাত্রা শুরু হয়। সফলতার সঙ্গে সংগঠনটি চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল।
বিএনএ/শাফি,এমএফ