ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় ১০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মুঠোফোনে উপবৃত্তির অর্থ ঢুকলেও, ১ হাজার ৭১৯ জনের মুঠোফোনে ছয় মাস (দুই কিস্তি) ঢুকেনি উপবৃত্তির অর্থ। কেনো বা কি কারণে তাদের ফোনে অর্থ ঢুকছে না তা জানেন না বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মুঠোফোনে মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশের মাধ্যমে অর্থ উপবৃত্তির অর্থ দেয়া হতো। কিন্তু তা হস্তান্তর করে নগদ মোবাইল ব্যাংকিং করা হয়। এই হন্তান্তরকরণের পর থেকেই উপবৃত্তির অর্থ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ওই ১ হাজার ৭১৯ জন শিক্ষার্থী।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা যায়, উপবৃত্তি বঞ্চিত অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যায়ণরত রয়েছে। কয়েক মাস পরেই এই শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা জীবন পেরিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা জীবনে পা রাখবে। ওইসব শিক্ষার্থীরা মাঝে তাদের প্রাপ্য উপবৃত্তির অর্থ না পাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অভিভাবকরা জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশির্বাদ হিসেবে উপবৃত্তির অর্থ পেয়েছে আমাদের সন্তানরা। প্রথমে শিওর ক্যাশ ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমাদের ফোনে উপবৃত্তির অর্থ প্রতিমাসে ঢুকতো। কিন্তু তা বদলে আবার নগদে হন্তান্তর করা হয়েছে। নগদে হন্তান্তরের পর থেকে আমাদের সন্তানরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ছয় মাস থেকে ফোনে উপবৃত্তির টাকা ঢুকছে না।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আপনাদের সমস্যা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শিঘ্রই এ সমস্যার সমাধান ঘটবে।
শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপবৃত্তি বঞ্চিত অভিভাবকদের মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ থেকে নগদে হন্তান্তর করার পর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের মাধ্যমে কয়েক দফায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ওই শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত উপবৃত্তির অর্থ পায়নি। প্রায় ছয় মাস থেকে তারা উপবৃত্তির অর্থ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে নগদে নতুন একাউন্ট খুলে নগদের যে কর্মীরা হন্তান্তর করেছে তাদের মাধ্যমেই কোথাও ভুল হয়েছে। তাই এই শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মৎ হাসিনা ভূঁইয়া বলেন, শিওর ক্যাশ থেকে হন্তান্তর করে নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে উপবৃত্তির অর্থ শিক্ষার্থীদের প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা অধিদপ্তর। হন্তান্তরের পর জানুয়ারী থেকে জুন মাসের (দুই কিস্তি। প্রতি তিন মাসে এক কিস্তি হারে) উপবৃত্তির অর্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মুঠোফোনে ঢুকলেও অজানা কারণে ১ হাজার ৭১৯ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মুঠোফোনে ঢুকেনি। যে সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মুঠোফোনে উপবৃত্তির অর্থ ঢুকেনি তাদের তালিকাসহ মুঠোফোনের নাম্বার শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই সমস্যা দেখা দিয়েছে দিনাজপুর জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও ।
বাংলা বিএনএ নিউজ, প্লাবন শুভ, জিএন