24 C
আবহাওয়া
১১:৫৯ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ভারতবিরোধী পাবলিক সেন্টিমেন্ট ও বিএনপির টেস্ট কেস!

ভারতবিরোধী পাবলিক সেন্টিমেন্ট ও বিএনপির টেস্ট কেস!

ভারতবিরোধী পাবলিক সেন্টিমেন্ট ও বিএনপির টেস্ট কেস!

।। শামীমা চৌধুরী শাম্মী ।।

বিএনএ, ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিরোধীদলের সমর্থনে কথা বলেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছেন ভারত, চীন ও রাশিয়া। বিএনপি মনে করেন, এই তিনটি দেশের প্রকাশ্য সমর্থনের কারণে বর্তমান সরকার বাধাহীনভাবে নির্বাচন করে সরকার গঠন করতে সমর্থ হয়।

নির্বাচনের পর দেখা গেল, বিএনপি- জামায়াত ঘরনার কতিপয় ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেয়। শেষ পর্যন্ত গত ২০ মার্চ দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলটির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী তার নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের’ প্রচারণার প্রতি সংহতি জানান।

YouTube player

নিজের গায়ের চাদর ফেলে দিয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাদের আপত্তি ভারতীয় শাসকদের পলিসি বা নীতি নিয়ে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ চীন থেকে ৪৯ শতাংশ পণ্য আমদানি করে। ভারত থেকে আমদানি করে ২০ শতাংশ। এর মধ্যে পেঁয়াজের মতো জরুরি অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য ভারতের ওপর নির্ভরতা আছে বাংলাদেশের আমদানিকারকদের। রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয় গমের বড় অংশ।

প্রশ্ন উঠেছে, চীন ও রাশিয়াকে বর্জন তালিকা থেকে বাদ দিলো কেন বিএনপি? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন এটি বিএনপির সস্তা রাজনীতি এবং কুটনৈতিক ব্যর্থতা।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার জেটিতে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফাকে দেওয়ার জন্য আনা ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ার ঘটনাটি স্বাভাবিকভাবে নেয়নি দিল্লী। যার খেসারত গত ২০ বছর যাবত দিচ্ছে বিএনপি।

সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কিছুদিন ভারতের বিষয়ে খুব একটা মুখ না খুললেও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ভারত নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেন দলটির নেতারা। আর নির্বাচনের পর থেকে প্রকাশ্যেই ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

কারণ ওই নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করলেও ভারতের বক্তব্য ছিল “নির্বাচন বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় ও বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে কারা দেশ পরিচালনা করবে।”

এরপরই ধারণা সৃষ্টি হয় যে, ভারতের অবস্থানের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চাপ উপেক্ষা করে বিএনপিবিহীন নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও আবারো ক্ষমতায় আসতে পেরেছে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনের পরপরই বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা গণঅধিকার পরিষদ নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ঢাকায় একাধিক রাজনৈতিক সভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেছেন।

২০১৪ সালের মে মাসে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় আসার পর থেকে নানা ঘটনায় বিএনপির নেতাদের মধ্যে এই ধারণাই বদ্ধমূল হয়েছে যে, ভারত বাংলাদেশে শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে স্বস্তিবোধ করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলেছেন, নির্বাচনের সময় থেকেই বিএনপি ধরেই নিয়েছে যে ভারতীয় নীতি নির্ধারকরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিচ্ছে। এ কারণেই তারা এখন ভারতীয় পণ্য বর্জনে সংহতির মাধ্যমে পাবলিক সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগাতে চাইছে। এটি হয়তো তাদের জন্য একটি টেস্ট কেসও হতে পারে। তারা হয়তো দেখতে চায় জনগণ কীভাবে নেয় আর ভারতই বা কেমন রেসপন্স করে।

বিএনপি ‘ভারত বয়কট’ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনৈতিক ও কুটনৈতিকভাবে কতটা সফল হবে তা দেখতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

বিএনএনিউজ/ বিএম/এইচ মুন্নী 

Loading


শিরোনাম বিএনএ