বিএনএ: পুলিশ পরিদর্শক মামুন খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভের ভারতীয় পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ডসহ অন্যান্য বিষয়ে জানতে দেশটির কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, আরাভ খানকে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতাই আরাভকে দেশে ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হলেও তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নির্ভর করছে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর।
মামুন খুনের মামলায় ১৬৪ ধারায় আদালতে ৭ আসামির দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির তথ্য অনুযায়ী আরাভ যৌন ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। এই অবৈধ ব্যবসায় তাকে সহযোগিতা করতেন স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার ওরফে কেয়া। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খান রাজধানীর বনানীর যে ফ্ল্যাটে খুন হন, সেখানেই রবিউল তার সহযোগীদের দিয়ে যৌন ব্যবসা চালাতেন।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আরাভের বিষয়ে দুবাইয়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ফেরানোর সব কিছুই করা হচ্ছে। এখন তাকে ফেরানোর পুরোটাই নির্ভর করছে সরকারের তৎপরতার ওপর। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং ইউএই- দুই দেশের সরকারকে একমত হতে হবে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মামুন হত্যাকাণ্ডের পর রবিউল ভারতে পালিয়ে যান এবং বিয়ে করেন। পরে ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন। পাসপোর্টে নাম দেয়া হয় আরাভ খান। এই পাসপোর্ট নিয়েই তিনি চলে যান দুবাইয়ে। সেখানে গত সপ্তাহে তার মালিকানাধীন ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন তারকা যোগ দিলে আরাভ আলোচনায় আসেন।
পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালের ৯ জুলাই গাজীপুরের জঙ্গল থেকে পুলিশ পরিদর্শক মামুনের পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে রবিউল, সুরাইয়াসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
সুরাইয়া তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে রবিউলের সঙ্গে তার প্রথমে পরিচয় এবং পরে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, রবিউল যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি নারীদের সঙ্গে পুরুষদের আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করতেন। একসময় সুরাইয়াও এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। যৌন ব্যবসার জন্য বনানীর ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়া হয়েছিল। আর সেই ফ্ল্যাটেই পুলিশ কর্মকর্তা মামুনকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়।
বিএনএনিউজ/এ আর