বিএনএ, স্পোর্টস ডেস্ক : নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে হারলো তামিম বাহিনী। টানা জয় নিয়ে এক ম্যাচ বাকী থাকতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করল স্বাগতিক কিউইরা।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় দু’দল। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে বাংলাদেশ করে ২৭১ রান। মূলত তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ মিঠুনের হাফসেঞ্চুরির ওপর ভর করে এ লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে। যদিও ব্যাটিংয়ের শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে ম্যাট হেনরির চতুর্থ বলে পুল করতে গিয়ে শটে থাকা উইল ইয়ংয়ের ক্যাচে দলীয় ৪ ও ব্যাক্তিগত শূন্য রানে বিদায় নেন লিটন দাশ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দেখেশুনে খেলন তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার। এই জুটি ৮১ রান তোলে। তবে ভালো খেলতে থাকা সৌম্য মিচেল স্যান্টনারের বলে স্টাম্পিং হয়ে মাঠ ছাড়েন। ৪৬ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩২ করেন এই বাঁহাতি।
দারুণ খেলতে থাকা তামিম ইকবাল দুর্ভাগ্যবশত রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৩১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৩৩ রানে মাথায় রান নিতে গিয়ে আউট হন তিনি। ১০৮ বলে ১১টি চারে ৭৮ করে টাইগার অধিনায়ক। নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চাশতম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। ২১২তম ওয়ানডেতে এসে এদিন ৮৪ বলে ফিফটি করেন তিনি। এরপরেই দলীয় শতরান তুলে নেয় বাংলাদেশ।
দলীয় ৪১তম ওভারে মিচেল স্যান্টনারের বলে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। ৫৯ বলে ৩টি চারে ৩৪ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর দলীয় ২০০ রান করে বাংলাদেশ।
শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান মিঠুন। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা এই ডানহাতি ৫৭ বলে ৭৩ রান করেন। তিনি ৬টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান। রিয়াদ ব্যক্তিগত ১৬ রানে বিদায় নেন। কিউইদের পক্ষে ২টি উইকেট পান স্পিনার স্যান্টনার। এছাড়া বোল্ট, হেনরি ও জেমিসন একটি উইকেট দখল করেন।
২৭২ রানের লক্ষে খেলতে নেমে ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় কিউইরা। তবে এদিন ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়েছে যেন বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতে উইকেট নিতে পারলেও ম্যাচের পরবর্তী সময়ে একের পর এক ক্যাচ ছেড়ে জয় হাতছাড়া করেছে তামিমরা।
নিউজিল্যান্ডের দলীয় সংগ্রহ পঞ্চাশ পেরোতেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো । মোস্তাফিজুর রহমানের কাটার কিংবা শেখ মেহেদি হাসানের স্পিনে চাপেই পড়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। চাপটা বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন কিউই অধিনায়ক টম লাথাম ও ডেভন কনওয়ে। তাদের বড় জুটির ওপর ভর করে বাংলাদেশের দেওয়া ২৭২ রানের কাছে বেশ স্বাচ্ছন্দের এগোচ্ছিল। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন টাইগার অধিনায়ক তামিম। রান আউটের ফাঁদে ফেললেন কনওয়েকে। ৯৩ বলে ৭২ রান করে সাজঘরে ফিরেন তিনি। লাথামের সঙ্গে দেয়াল হয়ে দাঁড়ানো জুটিটি থামে ১১৭ রানে।
এরপরে বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি হলেও ক্যাচ মিসের মহড়ায় নেমেছেন বাংলাদেশী ফিল্ডাররা। ক্রিজে দৃঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা টম লাথামের সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন মেহেদি। এরপর সেই লাথাম করেছেন ১০০। মুশফিকও তাসকিনের বলে সহজ একটি ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ। এতে টাইগারদের জয়ের আশা হয়েছে ক্ষীণ।
৫ উইকেট ও ১০ বল হাতে রেখেই নির্ধারিত লক্ষ্য অতিক্রম করেছে নিউজিল্যান্ড। লাথাম অপরাজিত ছিলেন ১১০ রান। তার সঙ্গে ছিলেন মিশেল। তিনি অপরাজিত ছিলেন ১২ রান নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭১/৬ (তামিম ৭৮, লিটন ০, সৌম্য ৩২, মুশফিক ৩৪, মিঠুন ৭৩*, মাহমুদউল্লাহ ১৬, মেহেদি ৭, সাইফ ৭*; বোল্ট ১০-০-৪৯-১, হেনরি ১০-৩-৪৮-১, জেমিসন ১০-২-৩৬-১, নিশাম ৯-০-৭৩-০, স্যান্টনার ১০-০-৫১-২, মিচেল ১-০-৮-০)।
নিউ জিল্যান্ড: ৪৮.২ ওভারে ২৭৫/৫ (গাপটিল ২০, নিকোলস ১৩, কনওয়ে ৭২, ইয়াং ১, ল্যাথাম ১১০*, নিশাম ৩০, মিচেল ১২*; মুস্তাফিজ ৮.৩-০-৬২-২, তাসকিন ১০-০-৬৭-০, মেহেদি ১০-২-৪২-২, সাইফ ৭.২-০-৪৩-০, মিরাজ ১০-১-৩৮-০, মিঠুন ২-০-১২-০, সৌম্য ০.৩-০-৭-০)।
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ২-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: টম ল্যাথাম।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।