বিএনএ, আন্তর্জাতিক ডেক্স:সেনাবাহিনীর নির্দেশনা অনুয়ায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা না করায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। এরপর লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যেতে বাধ্য হন তিনি। গত চার বছরে পাকিস্তানের রাজনীতির জল অনেকদূর গড়িয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সুস্পর্কের কারণে সেনা সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হয়। তাকে কারাগারেও যেতে হয়। পাকিস্তানের রাজনীতি এমন পট পরিবর্তন নতুন নয়। পাকিস্থানে আবারও নির্বাচনের আয়োজন চলছে।
এই প্রেক্ষাপটে শনিবার (২১ অক্টোবর) পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ দেশে ফিরে আসেন। যোগ দেন এক জনসভায়। লাহোরের ঐতিহাসিক ‘মিনার-ই-পাকিস্তান’ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে অনুষ্ঠিত বিশাল এক জনসভায় দীর্ঘ ভাষণে পাকিস্তানের অর্থনীতি ও রাজনীতি টালমাটাল, এ অবস্থা থেকে উন্নতির কথা বলতে গিয়ে নওয়াজ শরীফের কন্ঠে উঠে আসে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ না করে নওয়াজ শরীফ বাংলাদেশে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যাপক প্রশংসা করেন। আক্ষেপ করলেন আলাদা হওয়ার বিষয়ে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানের শাসকদের সমালোচনা করে নওয়াজ শরীফ বলেন, আমরা তখন বলেছি, এরা তো শুধু পাট চাষ করে এবং এরা আমাদের বোঝা। আমরা সেই বোঝা তুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেছিলাম। এখন দেখুন, সেই বাংলাদেশই উন্নয়নে আমাদের চেয়ে এগিয়ে গেছে। আর আমরা পেছনেই রয়ে গেছি। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
নওয়াজ শরীফ, প্রতিবেশীদের সঙ্গে যুদ্ধের মনোভাব বজায় রাখলে পাকিস্তান কখনও উন্নতি করতে পারবে না এমন মন্তব্য করে বলেন, পাকিস্তানের উন্নয়ন করতে হলে বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত; ৫ বছর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এক জনসভায় নওয়াজ শরীফ বলেছিলেন, পাকিস্তান সৃষ্টিতে বাঙ্গালীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। অথচ পাকিস্তান সৃস্টি হওয়ার পর সেই বাঙ্গালীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে পাকিস্তানের তৎকালীন শাসকরা।
নওয়াজ শরিফ তিনবার পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথমবার ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয়বার ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। আর তৃতীয়বার ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত।
ক্ষমতার মেয়াদের শেষ দিকে ২০১৭ সালে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নওয়াজ শরিফকে রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করেন পাকিস্তানের আদালত। ফলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন তিনি। এরপর ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৮ সালে দুর্নীতির দুই মামলায় নওয়াজ শরীফকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এতে তার ১৪ বছর কারাদণ্ড হয়। তবে দণ্ডিত হলেও নওয়াজ শরীফকে জেলে যেতে হয়নি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাইলে আদালত তাকে অনুমতি দেন। এরপর ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান।
বিএনএ নিউজ/ শাম্মী, ওজি,ওয়াইএইচ