24 C
আবহাওয়া
১:১৫ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আনোয়ারায় ৪ যুবকের ধর্ষণকাণ্ড অতঃপর পুলিশ ও কলাবাগান

আনোয়ারায় ৪ যুবকের ধর্ষণকাণ্ড অতঃপর পুলিশ ও কলাবাগান

আনোয়ারায় ৪ যুবকের ধর্ষণকাণ্ড অতঃপর পুলিশ ও কলাবাগান

বিএনএ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) : গার্মেন্টসকর্মী প্রেমিকাকে নিয়ে সারাদিন পারকী বীচ এবং পার্কে ঘুরা শেষে সন্ধ্যার পর কলাবাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে প্রেমিকসহ তার বন্ধুরা৷ এসময় ঘটনাস্থলে প্রেমিক উপস্থিত থাকলেও কোনোরকমে বাধা দেয়নি। এ ঘটনায় প্রেমিকসহ তার তিন বন্ধুকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী গার্মেন্টসকর্মী।

অভিযুক্তরা হলেন, রকি (২০), পলাশ (২৬), শিপংকর (২৭) ও চন্দন (২৫)। তারা সকলেই উপজেলার ৮নং চাতরী ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ দিকে বুধবার (২১ মার্চ) ভোরে চাতরীর সিংহরা এলাকা থেকে রকি ছাড়া বাকী ৩ আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বোয়ালখালী উপজেলার গার্মেন্টসকর্মী  (১৬)  ।  গত ১৫ মার্চ প্রেমিক সিএনজি চালক রকির সাথে সিএনজি রিক্সা করে পারকী সৈকতে বেড়াতে যায়। পরে তারা উপজেলার আখতারুজ্জামান পার্কে ঘুরে। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে গার্মেন্টসকর্মীকে পূর্ব সিংহরা কালাগাজী সড়কের একটি কলাবাগানে নিয়ে প্রেমিক রকির বন্ধু পলাশ, শিপংকর ও চন্দন মিলে  ধর্ষণ করে। এসময় প্রেমিকের সামনে বন্ধুরা ধর্ষণ করলেও সে কোনোরকম বাধা দেয়নি। পরবর্তীতে বিষয়টি স্বজনদের জানালে স্বজনদের পরামর্শে সে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

ঘটনার দিন: উল্লেখ্য যে, গত ১৫ মার্চ উপজেলা চাতরী ইউনিয়নের পূর্ব সিংহরা কালাগাজী সড়কের একটি কলাবাগানে নিয়ে প্রেমিক রকি, তার বন্ধু পলাশ, শিপংকর ও চন্দন মিলে এক কিশোরীকে (১৬) গণধর্ষণ করে। পরে ভিকটিম থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থানায় ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হয়।

পুলিশ ও কলাবাগান : তবে এই ঘটনায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কাণ্ড ধর্ষকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ভিকটিমের বড় ভাই বলেন, সোমবার (২০ মার্চ) চাতরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে আমরা মৌখিক অভিযোগ করেছি। ঘটনার পরদিন ১৬ মার্চ আমরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ১৭ মার্চ রাতে পুলিশ চাতরী ইউনিয়নের সিংহরা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ধনঞ্জয় বিশ্বাস ভোলাকে দিয়ে ধর্ষকদের সঙ্গে এক লাখ টাকায় সমঝোতার চেষ্টা করেন।

প্রথম অভিযুক্ত রকির বাবা বিধান দত্তের বয়ানে জানা যায় অন্য দিকে। যে বয়ানে অভিযুক্ত হয় ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য। ছেলেটা সিএনজি চালক। একদিন কালাবিবির দিঘি চায়না রোডের মোড় থেকে ছেলেটার সিএনজি করে মেয়েটি কর্মস্থলে আসার সময় ছেলেটার সাথে মেয়েটার নাম্বার আদান প্রদান হয়৷ সে থেকে পরিচয় শুরু৷ পরিচয়ের সুবাধে ১৫ তারিখ ছেলেটি মেয়েটাকে পারকি নিয়ে যায়, এরপর উপজেলার পার্কে সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় ২ হাজার টাকা কন্ট্রাক্টে ২ছেলের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য কলা বাগানে নিয়ে যায়৷ এমন সময় ২জনের স্থলে ৩জন হয়ে যাওয়ায় মেয়েটা ঝগড়া শুরু করে দেয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছালে বাকি তিনজন পালিয়ে যায় আর রকি আর মেয়েটা পুলিশের হাতে ধরা পরে। এরপর রকিকে আর সাথে থাকা একজন কনস্টেবলকে রাস্তায় সিএনজিতে বসিয়ে রেখে এএসআই ফারুক কলা বাগানের মধ্যে মেয়েটির সাথে ২০-৩০ মিনিট সময় কাটায়। পরবর্তীতে এক ঔষধ দিয়ে গরম পানি দিয়ে গোসল করে ফেলতে বলে মেয়েটাকে ছেড়ে দেয়। এরপর ছেলেটার কাছ থেকে টাকা দাবি করে। ছেলেটা তার পিতার মাধ্যমে ১৮ হাজার টাকা এনে এএসআই ফারুককে দিলে তিনি সিএনজি আর রকিকেও সেদিন রাতে ছেড়ে দেয়। এরপরের দিন রাতে গিয়ে এএসআই ফারুক ছেলেটির ঘরে ছেলেটাকে খুঁজতে যায় এবং কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলে। তারা রাজি না হওয়ায় মেয়েটিকে দিয়ে অভিযোগ করিয়ে মামলা দায়ের করে।

ঘটনার বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা মুহাম্মদ হাছান জানান, বোয়ালখালী উপজেলার একজন গার্মেন্টস কর্মী আনোয়ারায় কাজ করেন। তাকে কয়েকজনে মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের খবর পেয়ে দায়িত্বরত এ এস আই মো. ফারুক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে  অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্বার করেন। এসময় ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে ভিকটিম থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে থানায় ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হয়। কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আজকে। প্রধান আসামি রকি (২০) পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে এডিশনাল এসপি (ডিবি) আরিফ হোসেন বলেন, বিষয়টা আমরা সরেজমিন তদন্ত করতে এসেছি। অভিযোগ উঠা পুলিশ সদস্যের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টা আমরা তদন্ত করে দেখতেছি। সব কিছু আইনি প্রক্রিয়ায় এগুচ্ছে। তদন্ত করে সব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনএ/ এনামুল হক নাবিদ, বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ