বিএনএ,ববি: যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করে ববির তৎকালীন উপাচার্য এসএম ইমামুল হক। কিন্তু সম্প্রতি জানা যায়, তার বরখাস্তের আদেশ নিষ্পত্তি করেছেন উচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের এক আদেশের পর তিনি সোমবার (২০শে মার্চ) কর্মস্থলে এসে যোগদানের চিঠি দিয়েছেন ববি কর্তৃপক্ষকে।
মনিরুলের আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ আমার মক্কেলের বরখাস্তের বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। এর ফলে রেজিস্ট্রার পদে তাঁর যোগদানে বাধা থাকল না।’
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম জানান, উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে তিনি গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যোগদানের জন্য চিঠি রেজিস্ট্রার দপ্তরে উপস্থাপন করেছেন। ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের এক আদেশে যে কারণে বরখাস্ত করেছে তা বাতিল করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘এখনো কাজে যোগদানের অনুমতি পাইনি,তবে কর্তৃপক্ষ আমার উপর সুবিচার করবে এটা আশা করছি ৷
ববির দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোহসীন উদ্দীন চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরে এ নিয়ে বলেন, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
এ বিষয়ে ববি ট্রেজারার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভুইয়া জানান, মনিরুল যোগদানের জন্য ক্যাম্পাসে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। মনিরুল বিধি অনুযায়ী কাজ করার বিষয়টি তাঁকে জানান।
২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি ওই সময়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্ত করেন। পরে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও কাজে যোগ দিতে চেয়েছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে যোগদান করতে দেননি। সিণ্ডিকেটের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে কাজে যোগ দিতে যান রেজিস্টার। । তার কাগজপত্র গ্রহণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এসএম ইমামুল হক বলেছিলেন, বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবেলা করা হবে।
আরো জানা গেছে, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিপ্রত্যাশী এক তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ ওঠে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও প্রমাণসহ রেজিস্ট্রার মনিরুলের বিচারের দাবিতে ভিসির কাছে লিখিত আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভিসি সিন্ডিকেটের ৩ সদস্যের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভা রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে নৈতিক স্খলনের দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং নতুন রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. হাসিনুর রহমানকে। চাকরি হারিয়ে ভিসিকে সরাতে ছাত্র আন্দোলনে সাবেক রেজিস্ট্রার মনিরুলের বিরুদ্ধে ইন্ধনের অভিযোগ ওঠে। পরে সর্বশেষ মনিরুল ইসলামকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
বিএনএ/রবিউল ইসলাম, ওজি