১৩বছর বয়সী ৫ম শ্রেণীর ছাত্র মিরাজ। প্রতিদিন তার কোমল হাতে গ্লাভস ব্যবহার করে মানুষের জুতা পালিশ করে। নোংরা পোশাক পরা, ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় তার হাত ও মুখ ফাটা, তবু সে সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী।
আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশের রাজধানী হেরাত সিটির চাহারবাগ জেলার একটি মাটির ঘরে তার পরিবারের সাথে বসবাস করে সে, তার দৈনিক আয় মাত্র ৩০ থেকে ৬০ আফগানি(টাকা)। মিরাজের আশা শিগগির সে সহিংসতা ও যুদ্ধ মুক্ত একটি স্কুলে নিয়মিত লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে।
গত ১৫আগস্ট তালেবান ও তাদের মিত্ররা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিলে দেশটির সাবেক সরকারের প্রেসিডেন্ট,মন্ত্রীরাসহ অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। দেশটির ব্যবসা বাণিজ্য, সরকারি ব্যবস্থাপনায় আর্থিক সংকটে দেখা দেয় অচলাবস্থা। দরিদ্র এ দেশটি কয়েকযুগ ধরে টানা যুদ্ধে আর্থিকভাবে চরম বিপর্যস্ত। দেশটির সাধারণ নাগরিকরা দুবেলা খাবার যোগাড় করতে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রি রাস্তায় রাস্তায় দাড়িয়ে বিক্রি করতে শুরু করে।এখন শীতকাল সেখানে। একদিকে শীত ও অন্যদিকে খাবারের সংকট এখন সাধারণ আফগানদের জীবনকে করুণ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।
এত অল্প বয়সে মিরাজই তার আট সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তার বাবা অসুস্থ এবং কাজ করতে অক্ষম এবং তার বড় ভাই সম্প্রতি কাজের জন্য ইরানে গেছে।
মিরাজ খুশি যে এখন যুদ্ধ নেই। আগে রাস্তায় বসে মানুষের জুতা পালিশ করার সময় সে অজানা আতঙ্কে ভুগতো, কারণ কখন যে বিস্ফোরণ বা সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটনা ঘটে।
ছোট এ শিশুটি হেরাতের বহু সহিংসতার স্বাক্ষী। তার চোখেমুখে সব সময় থাকতো অজানা আতঙ্ক।
শান্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, মিরাজ বলে, “শান্তি মানে নিরাপত্তা, কাজ এবং দারিদ্র্য নয়।”তার আশা একদিন আফগানিস্তানে যুদ্ধ এবং নিরাপত্তাহীনতা চিরতরে বিলুপ্ত হবে।
কাজের ফাকে ফাকে সপ্তাহে ১/২দিন মিরাজ স্কুলে যায়। সে জানালো, সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায় কারণ লেখাপড়া ছাড়া ভবিষ্যত অন্ধকার। পরিবারের দু:খ কষ্ট দূর করা যাবে না।
সূত্র: Pajhwok