বিএনএ, চট্টগ্রাম: ২০০০ সালে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানার উত্তর বার্মা কলোনিতে পাঁচ বছর বয়সী শিশু রোজিনাকে অপহরণ করে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. দুলালকে (৪২) গ্রেফতার করেছে র্যাব। ২৩ বছর পালিয়ে ছিল সে।
শনিবার রাজধানী ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে র্যাব-১ এর সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭।
গ্রেপ্তার দুলাল (৪২), নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানার নয়া চৈতাপাড়ার মো.ছলিমুদ্দিনের ছেলে।
র্যাব-৭ জানিয়েছে, ২০০০ সালের ৮ ডিসেম্বর বায়েজীদ বোস্তামী থানার উত্তর বার্মা কলোনী এলাকা থেকে শিশু রুজিনাকে প্রতিবেশি জসিম উদ্দিন ওরফে ইকবাল তার ঘরে আটকে রাখে। পরে শিশু রোজিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ বস্তায় ঢুকিয়ে আলমিরাতে লুকিয়ে রাখে। এর মধ্যে রুজিনাকে তার বাবা-মা খোঁজাখুঁজি করার একপর্যায়ে জসিম নিজে টাকা নিয়ে মাইকে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করে। ওইদিন দিবাগত রাত ৯টার দিকে আসামি জসিম, তার স্ত্রী পারভিন আক্তার এবং মো. দুলাল একটি চিরকুট নিয়ে ভিকটিমের মায়ের সামনে হাজির হয়। চিরকুটটি তাদের টয়লেটের সামনে পাওয়া গেছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
চিরকুটে ১২ হাজার টাকা নিয়ে কাফকোর পাশে পাহাড়ে গেলে সেখানে নিখোঁজ রুজিনাকে ফেরত দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তিনজনের কথাবর্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় উপস্থিত লোকজন তিনজনকেই আটক করে রাখে। গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে কৌশলে জসিম পালিয়ে যায়। পরদিন জসিমের ঘরের আলমারি থেকে শিশু রুজিনার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে বায়েজীদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় পুলিশ পারভীন ও দুলালকে গ্রেপ্তার করে। পরে দুই আসামি জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
মামলায় পুলিশ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। পরে দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় আদালত আসামিদের অনুপস্থিতিতে আসামি জসীম ওরফে ইকবাল ও তার স্ত্রী পারভীনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুলালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর দুলাল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করে। তাকে রোববার বায়েজিদ থানায় সোপর্দ করা হয় বলে জানায় র্যাব-৭।