23 C
আবহাওয়া
১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ

ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ

ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ

বিএনএ,ঢাকা : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অন্তর্ভুক্ত পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় সরাকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সমমনা ৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও একজন বিশিষ্ট নাগরিক যৌথভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), নিজেরা করি, এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ডরিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ব্লাস্ট, নাগরিক উদ্যোগ, গ্রীনভয়েস, এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের পক্ষে বেলার প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

লিগ্যাল নোটিশে বিবাদীরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র, ভূমি মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউকের) চেয়ারম্যান, পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর এলাকা প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক (ডিসি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সমমনা ৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও একজন বিশিষ্ট নাগরিক যৌথভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেছেন। পাঠনো লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে মাঠটি জনস্বার্থে মাঠ হিসেবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে দাবি জানিয়েছে সংস্থা সমূহ। অননুমোদিত ও বেআইনীভাবে শুরু হওয়া মার্কেট নির্মাণের সব কার্যক্রম বন্ধ করে মাঠকে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্যে বলা হয়েছে এ নোটিশের মাধ্যমে।

উল্লেখ্য, ডিএসসিসির ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত ৭ দশমিক ৪৭ একর আয়তন বিশিষ্ট গেণ্ডারিয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ যা ঢাকা মহানগরীর সর্ববৃহৎ মাঠ। এ মাঠে পুরান ঢাকার সাতটি থানা এলাকার শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলা করে। এটি শুধু একটি খেলার জায়গাই নয়, আশপাশের এলাকার বাসিন্দাসহ অনেকে অবসর সময় কাটানোর জন্যও এ মাঠে যান। ধূপখোলা মাঠটি ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্য ও গর্বের একটি অংশ।

এ মাঠে বাংলাদেশের জাতীয় দলের বেশকিছু খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখনো প্রতি বছর ধূপখোলা মাঠ থেকে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরি হয়। মাটটি মূলত তিনভাগে বিভক্ত। এর একটি অংশ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। বাকি দুটি অংশ ইস্ট অ্যান্ডক্লাব মাঠ ও স্থানীয় খেলার মাঠ। তিনটি অংশের প্রত্যেকটি আকারে একটি ফুটবল মাঠের চেয়ে বড়।

২০১৬ সালে মাঠে একটি বাণিজ্যিক শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাধ্য হয়ে গণশুনানির আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তাতে এলাকাবাসী বাণিজ্যিক আগ্রাসন থেকে ধূপখোলা মাঠ রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেন। গণ দাবির মুখে বাণিজ্যিক শিশুপার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেও বর্তমানে মাঠটিতে গ্যালারিসহ খেলার মাঠ ও শিশু কর্নার এবং একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

প্রবলজন আপত্তি ও আন্দোলনের ফলে প্রকল্পের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখলেও ২০২১ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মাঠের ভেতরে রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে একটি বহুতল মার্কেট তৈরির কাজ শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, এটি মাঠ ‘উন্নয়ন’ উদ্যোগের অংশ। এ মার্কেটের কারণে মাঠের মোট ০ দশমিক ৬২ শতাংশ জায়গা কমে যাবে।

বহুতল মার্কেটটি ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মাঠটিতে হাঁটার রাস্তা, বসার ব্যবস্থা, পার্কিং জোন, একটি ক্যাফেটেরিয়া ও শিশুদের জন্য একটি আলাদা জোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ফলে মাঠের জায়গা আরও কমবে। কথিত উন্নয়নকাজের ফলে ফুটবল মাঠের আকার সাত দশমিক ৪৭ একর থেকে চার দশমিক এক একরে নেমে আসবে।

এর ফলে উন্মুক্ত ও জনসাধারণের ব্যবহৃত স্থান হিসেবে মাঠের মূল বৈশিষ্ট্য গুলোই হারিয়ে যাবে আর সঙ্গে হারাবে এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য যেন কোনোভাবেই হারিয়ে না যায় এবং ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ যেন মাঠ হিসেবেই ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে সে উদ্দেশ্যেই এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বিএনএনিউজ২৪.কম/এসকে/এনএএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ