বিএনএ, ঢাকাঃ স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। উদ্বোধনের পর দিন থেকে যান চলাচল শুরু হবে সেতুতে। সেদিন থেকেই দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের নতুন-পুরনো ২৩ রুটে বাস নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন-বিআরটিসি।
মঙ্গলবার (২১ জুন) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার মেজর মোক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন ডিপো থেকে ২৩টি রুটে বাসগুলো পরিচালনা করা হবে। পরে চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এ বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, আপাতত সবগুলো বাস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এসব বাসে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া আদায় করা হবে। ২৬ তারিখ চলাচল শুরুর পর যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী রুটগুলো পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে।
বর্তমানে ঢাকা থেকে ফেরি পারাপারের মাধ্যমে খুলনা এবং যশোর রুটে বিআরটিসির ১৮টি এসি বাস চলছে। এখন ঢাকা থেকে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুর, কুয়াটাকাসহ ২১ জেলায় বাস চালু করা হবে।
পদ্মা সেতু হয়ে যেসব রুটে বিআরটিসির বাস চলবে
পদ্মাসেতু হয়ে বিআরটিসির যে ২৩টি রুটে বাস চলবে তার কিছু ছাড়বে ঢাকার গুলিস্তান থেকে। এছাড়া খুলনা যেতে পদ্মা সেতু হয়ে গোপালগঞ্জ ও ফকিরহাট ভায়া হিসেবে বাস সার্ভিস দেবে বিআরটিসি। একই সঙ্গে গুলিস্তান থেকে যশোরের বেনাপোলে গাড়ি যাবে পদ্মাসেতু হয়ে। মাঝপথে ভাঙা, গোপালগঞ্জ, খুলনা ও যশোর পাড়ি দেবে। গুলিস্তান থেকে সাতক্ষীরা রুটে পদ্মাসেতু হয়ে ভাঙা, গোপালগঞ্জ ও খুলনা ভায়া হিসেবে বাস চলবে। আবার বরিশালগামী বাস গুলিস্তান থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ভাঙা, টেকেরহাট, মোস্তফাপুর ও গৌরনদী ভায়া ধরবে। গুলিস্তান থেকে শরীয়তপুর যাবে আরেকটি সার্ভিস। মাঝপথে পদ্মাসেতু, ভাঙা ও জাজিরা পড়বে।
এছাড়া গুলিস্তান থেকে যশোর যাওয়া যাবে বিআরটিসির বাসে। এ জন্য পদ্মাসেতু, ভাঙা, ভাটিয়াপাড়া, নড়াইল ও যশোর রুট ধরা হয়েছে। মিরপুর-১২ নম্বর থেকেও বরিশাল যাবে বিআরটিসির বাস। ফুলবাড়িয়া, সায়েদাবাদ, ভাঙা, টেকেরহাট, মোস্তফাপুর ও গৌরনদী পড়বে চলতি পথে। ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে মাদারীপুর যাওয়া যাবে শিবচর, টেকরহাট ও মোস্তফাপুর হয়ে। আবদুল্লাহপুর থেকে পয়সারহাট যেতে পদ্মা সেতু-ভাঙা-মোস্তফাপুর-গৌরনদী-আগৈলঝরা রুট করা হয়েছে।
নরসিংদী থেকে চরমুগুরিয়া যাওয়া যাবে পদ্মাসেতু দিয়ে। এজন্য গুলিস্তান, মাওয়া, পদ্মা সেতু, শিবচর ও মাদারীপুর রুট ধরা হবে। নরসিংদী থেকে কাশিয়ানী যাওয়া যাবে বিআরটিসিতে। এজন্য গুলিস্তান, মাওয়া ও মুকসুদপুর রুট থাকছে ভায়া হিসেবে। এছাড়া ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যেতে মাওয়া, পদ্মাসেতু ও জাজিরা আরেকটি রুট ধরা হয়েছে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটাও যাওয়া সম্ভব সরকারি এ বাসে। এজন্য পদ্মাসেতু, ভাঙা, বরিশাল ও পটুয়াখালী রুট ব্যবহার করা হবে।
ঢাকা খেকে খুলনা যেতে পদ্মাসেতু, ভাঙা, গোপালগঞ্জ, ফকিরহাট ও কাটাখালী রুট ধরা হয়েছে। ঢাকা থেকে যশোর আরেকটি রুট পদ্মা সেতু, ভাঙা, ভাটিয়াপাড়া, কালনাঘাট, লোহাগড়া ও নড়াইল পথ ধরবে। ঢাকা থেকে পিরোজপুর যেতে বিআরটিসির একটি সার্ভিস চলবে পদ্মাসেতু, ভাঙা, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া ও নাজিরপুর ধরে। গুলিস্তান থেকে গোসাইরহাট রুট ধরা হয়েছে ভায়া শরীয়তপুর ও ডামুড্যা বাইপাস।
এছাড়া বরিশাল থেকে ঢাকায় পদ্মাসেতু হয়ে আরেকটি সার্ভিস দেওয়া হয়েছে। মাঝপথে ভাঙা, পদ্মাসেতু ও যাত্রাবাড়ী পড়বে। কুয়াকাটা থেকে ঢাকা আসতে চাইলে পটুয়াখালী, বরিশাল, ভাঙা, পদ্মাসেতু ও যাত্রাবাড়ী অতিক্রম করতে হবে। পিরোজপুরের ভা-ারিয়া থেকে ঢাকায় আসা যাবে ঝালকাঠি, বরিশাল, ভাঙা ও পদ্মাসেতু হয়ে। পটুয়াখালীর বাউফল থেকে ঢাকা আসতে বরিশাল, পদ্মাসেতু ও যাত্রাবাড়ী ধাকবে ভায়া হিসেবে। এদিকে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আরেকটি সার্ভিসের রুট পড়বে ভায়া পদ্মাসেতু, ভাঙা, বরিশাল ও পটুয়াখালী নামে।
উল্লেখ্য, ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৬ জুন সকাল ছয়টা থেকে টোল দিয়ে সেতু পার হওয়া যাবে। ইতোমধ্যে টোলের হার নির্ধারণ করেছে সেতু বিভাগ। কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন-কেইসি ও চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড-এমবিইসি যৌথভাবে টোল আদায় করবে।
বিএনএ/এমএফ