ডা. আব্দুল হাই ১৯২৮ সালের ১ নভেম্বর উত্তর কেরোয়া গ্রামের রায়পুর থানার তৎকালীন নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মৃত আব্দুল গনি, মাতা-মৃত কুলসুম বেগম। তিনি গাদকালিন্দিয়া স্কুল, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৪৪ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৬ সালে ঢাকা কলেক থেকে আই.এস.সি এবং ১৯৫২ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯৭৬ সালে মস্কো থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন।
এম.বি.বি.এস. পাশ করার পর তিনি বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-১৯৬৯ হতে ১৯৭২ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত খুলনা ও ঢাকার সিভিল সার্জন, পরবর্তীতে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর-এর উপ-পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেশ কিছুকাল উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি লিবিয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সেখানে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকার মহাখালীস্থ জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি UNICEF-এর কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯০ সাল হতে দেশের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজে (বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) সুপারিনটেন্ডেট ও পরে অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি একান্তই অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের ধর্মঘটে পিকেটিং-এ অংশ নিয়েছিলেন আব্দুল হাই। ‘রেলওয়ে ওয়ার্কশপে’ পিকেটিং-এর দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রনেতা আব্দুল হাই। ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ সরকারি স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধ দিবস’ পালন করে। মেডিকেল ব্যারাকের বামপন্থি ছাত্ররা বিক্ষোভের অংশ নেয়। বিক্ষোভকারী ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আব্দুল হাই। একুশে ফেব্রুয়ারির আন্দোলন এবং পরে ব্যারাককেন্দ্রিক একুশের আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক (১১) আবদুল লতিফ