।। এনামুল হক নাবিদ।।
জনভোগান্তি এড়াতে অনুমোদন ছাড়া কোথাও পশুর হাট বসানো যাবে না প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের পরও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিইউএফএলের সড়ক দখল করে বসছে অবৈধ পশুর হাট। কাফকো হাউজিং কলোনির সামনে সিইউএফএল সড়কের দক্ষিণ পাশে এই বাজার বসানো হচ্ছে। এই অবৈধ হাট বসানোর নেপথ্যে রয়েছে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের ইউপি সদস্যরা। এই ইউপি সদস্যদের নেতৃত্বে বাজার পরিচালনা করবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্র বলছে, চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) এর মালিকানাধীন বন্দর জেটিঘাট হতে চাতরী চৌমুহনী পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তার উভয় পাশে কোটি কোটি টাকার জমি রয়েছে।
দেখা যাচ্ছে এবার সিইউএফএলের সড়ক দখল করে বসানো হচ্ছে গরুর হাট। এ নিয়ে সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ বলছে আমাদের জায়গায় কোন ইজারা বা গরুর হাট বসানোর সুযোগ নাই।
এ দিকে গত সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় আইনশৃংখলা সভায় যানজট নিরসনসহ জনভোগান্তি রোধে অনুমোদন ছাড়া কোথাও পশুর হাট বসানো যাবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। তবে কেইপিজেড, কাফকো, সিইউএফএলসহ হাজার হাজার শ্রমিকের যাতায়াতের এই ব্যস্ততম সড়কে অবৈধ পশুর হাট বসলে জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে যাবে বলে মনে করেন শ্রমিকরা।
জানা যায়, এই মহাল খান বাজারে অতীতে কোন সময় গরুর হাট বসে নাই। মহাল খান হাট মূলত নিয়মিত হাট-বাজার হিসেবে ডাক হলেও গরুর বাজার হিসেবে কোন সময় ডাক হয়নি।
উপজেলা সূত্র বলছে, এ বছর উপজেলায় তিনটি স্থায়ী ও নয়টি অস্থায়ীসহ ১২টি পশুর হাটে কোরবানের পশু কেনাবেচা হবে। তার মধ্যে রয়েছে তৈলারদ্বীপ পশুর হাট, বটতলী রুস্তম হাট, চাতরী চৌমহনী বাজার, রায়পুর ওয়াহেদ আলী চৌধুরী বাজার, জেদ্দার হাটু, গহিরা দোভাষীর হাট, আন্নর আলী সিকদার হাট, বরুমচড়া কানু মাঝির হাট, মিন্নত আলী দোভাষীর হাট, কেবি ছাত্তার হাট, মালঘর বাজার ও পালের হাট। তৈলারদ্বীপ পশুর হাট, বটতলী রুস্তম হাট ও চাতরী চৌমহনী বাজারে স্থায়ী পশুর হাটের ইজারা রয়েছে। এছাড়া বাকি নয়টি বাজারে কোরবান উপলক্ষে অস্থায়ী পশু কেনাবেচা হয়ে থাকে।
এ দিকে এই অবৈধ হাট বসার ফলে পাশ্ববর্তী বাজারের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়ে চাতরী চৌমুহনী বাজারের ইজারাদার শওকত ওসমান জানান, আমরা সরকার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বাজার ইজারা নিয়েছি। কিন্তু সরকারকে কোনো রাজস্ব দেওয়া ছাড়া চলাচলের রাস্তা দখল করে কাফকো কলনীর সামনে অবৈধভাবে গরুর হাট বসানো হচ্ছে। এভাবে অবৈধ হাট বসানোর ফলে আমাদের বাজারের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়বে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমি এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি এবং এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানান এই ইজারাদার।
হাট বসানোর বিষয়ে ইউপি সদস্যদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, আমরা হাট বসানোর বিষয়ে ডিসি এবং ইউএনও থেকে অনুমতি নিয়েছি এবং সিইউএফএলকে বিষয়টি জানিয়েছি।
অথচ সিইউএফএলের উপ ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কাজী আমিনুল হক বলেন, সিইউএফএলের জায়গায় উপজেলা প্রশাসন কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইজারা দেওয়ার সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, গতকাল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ফোন দিয়ে বলেন স্থানীয়রা বৃষ্টির জন্য প্যান্ডেল করে গরুর রাখার সুযোগ চেয়েছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে সিইউএফএলের জায়গায় কোন পশুর হাট-বাজার করা যাবে না। কেউ যদি এরকম করে থাকে তাহলে সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ ইশতিয়াক ইমন বলেন, রাস্তায় কিংবা অবৈধভাবে কোনো হাট বসানোর সুযোগ নাই আর কাফকো হাউজিং এর সামনে গরুর হাট বসছে বিষয়টি আমি কিন্তু এখনো অবগত নই। অভিযোগ পেলে আমি ব্যবস্থা নিব।
বিএনএনিউজ২৪ডটকম