30.5 C
আবহাওয়া
৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ - মে ১৩, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » আওয়ামী লীগ-যুবলীগেই কী এনসিপি’র ভরসা?

আওয়ামী লীগ-যুবলীগেই কী এনসিপি’র ভরসা?


বিএনএ,ডেস্ক : আত্মপ্রকাশের দুই মাসের মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের ছায়ায় প্রতিষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। দলটির শীর্ষ অনেক নেতা- জড়িয়ে পড়েছেন দূর্নীতি-অনিয়মে। টেন্ডারে কমিশন, বদলি বানিজ্য, মামলায় হয়রানি না করতে মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে এনসিপির অনেক নেতাই এখন কোটিপতির তালিকায়। তাদের হাল আমলের বিলাসী জীবন জুলাই বিপ্লবের স্পিডকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

এই অবস্থায় গত শুক্রবার এনসিপির সাধারণ সভা ডাকা হয়। ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৩ জন সভায় উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে টানা ১১ ঘণ্টা চলা এনসিপির তৃতীয় সাধারণ সভায় নবগঠিত দলটির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কাজে জড়ানো, অজানা উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া, দলের চেয়ে ব্যক্তির ভাবমূর্তিকে বড় করে তুলে ধরার অভিযোগ ওঠে।

মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন। দলীয় কার্যক্রমের চেয়ে নিজের নির্বাচনী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ায় আরেক মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকেও জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের দূর্নীতির বিষয়টিও উঠে আসে।

সভায় সমালোচনার মুখে পড়েন ছাত্রলীগ ছেড়ে শেখ হাসিনার পতন ঘটানো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যোগ দিয়ে আলোচিত হওয়া সারজিস আলম। তিনি ঈদের আগে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে দেড় শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে শোডাউন করে সমালোচিত হন।

সাধারণ সভায় এনসিপি নেতারা প্রশ্ন তোলেন, সারজিস কীভাবে লাখ লাখ টাকা খরচ করে শোডাউন করছেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করে সারজিস বলেন, ‘আমি নিজেই শোডাউনের বিপক্ষে। তবে পঞ্চগড়ের মতো প্রত্যন্ত এলাকার রাজনৈতিক বাস্তবতায় শোডাউন করতে হয়েছে। মামাতো, ফুফাতো ভাই ও একজন ফুফার আর্থিক সহযোগিতায় গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করেছি। ৪০টি গাড়ি নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনেকে গাড়ি নিয়ে আসায় সংখ্যা বেড়েছে।’

সভায় কথায় কথায় হাসনাত আবদুল্লাহ’সহ অনেকের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এগুলো ‘ডিফেন্ড’ করতে গিয়ে সবাইকে দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে, তা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত হয়।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাহউদ্দীন তানভীরের বিরুদ্ধে আত্মপ্রচার ও সরকারি কাজ থেকে কমিশন আদায়ের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি নাগরিক কমিটিতেও ছিলেন না, জুলাই অভ্যুত্থানেও সমন্বয়ক পর্যায়ের কেউ ছিলেন না। তবু এনসিপিতে কীভাবে যুগ্ম সদস্য সচিবের পদ পেলেন? তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

এনসিপির এই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী তিন মাস এনসিপি নেতারা নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকবেন। এ সময়ের মধ্যে কেউ নির্বাচনী এলাকায় প্রচার কিংবা শোডাউন করলে শাস্তি পেতে হবে। জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠনে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক পদ পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ৪০ বছর। সাংগঠনিক কাজের স্বার্থে ৬৪ জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করা হয়। জেলা কমিটি হবে ৩১ থেকে ৫১ সদস্যের, উপজেলা কমিটির আকার হবে ২১ থেকে ৪১ সদস্যের। কমিটিগুলো অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও সদস্য সচিবের সইয়ে অনুমোদিত হবে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের নিয়ে আপাতত জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন করা হবে। আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতিত অন্য দলের নেতাকর্মী আসতে চাইলে নেওয়া হবে। তবে আওয়ামী লীগের হয়ে যারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ছিলেন, যারা সন্ত্রাসী মাস্তান ও চাঁদাবাজ হিসাবে পরিচিত– এমন কাউকে নেওয়া হবে না।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের বয়স ৩০ বছরের কম কিন্তু জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স কেন কমপক্ষে ৪০ হতে হবে– এমন প্রশ্ন নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির বিতর্কিত সমন্বয়কদের লাগাম টানতে এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের তরুণ নেতাদের দলে জায়গা করে দিতে জেলা উপজেলার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বয়স সীমা ১০বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বিএনএ

Loading


শিরোনাম বিএনএ