বিএনএ, ইসলামিক ডেস্ক: এতেকাফ আল্লাহর এক অনন্য অফুরন্ত দান। এর মাধ্যমে মুমিন বান্দা মহান আল্লাহর অধিক নৈকট্য লাভ করতে পারে এবং তার মেহেরবান মালিকের কাছে নিজের পূর্ণ গোলামী, বিনয়- নম্রতা ও অসহায়ত্বকে পেশ করতে পারে। তার রহমতের দুয়ারে রহমতের ভিখারি হয়ে বিরামহীন কড়া নাড়তে পারে। তাই এতেকাফ ছিল প্রিয় নবীর (সা.) প্রিয় আমল।
তিনি নিজে রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতেন। মদীনায় হিজরতের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতি বছরই নবিজি (সা.) এতেকাফ করেছেন। অবশ্য জিহাদের সফরে থাকায় এক বছর এতেকাফ করতে পারেননি তাই পরবর্তী বছর ২০ দিন এতেকাফ করেছেন। আরেক বছর বিশেষ কারণে রমজানে এতেকাফ না করায় শাওয়ালে কাজা করেছেন। যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন সে বছর তিনি ২০ দিন এতেকাফ করেছেন।
১। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন এতেকাফকারী সর্ব প্রকার গুনাহ থেকে মুক্ত থাকে এবং সে ওইসব নেকির সওয়াবও লাভ করে যা এতেকাফ করার কারণে সে করতে পারেনি। (সুনানে ইবনে মাজাহ -১৭৮১)
২। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিন এতেকাফ করবে আল্লাহতায়ালা তার ও জাহান্নামের মাঝে তিন পরিখা দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। যার দূরত্ব আসমান জমিনের সমান। (কানযুল উম্মাল -২৪০১৯)
৩। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করবে, তার জন্য দুটি হজ ও দুটি ওমরার সাওয়াব রয়েছে। (বায়হাকী- ৫৮৬)
৪। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সাওয়াবের প্রত্যাশায় এবং ইবাদত মনে করে এতেকাফ করবে তার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (মুসনাদে দাইলামি)
৫। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সা:) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রমজান মাসে শেষ দশকে এতেকাফ করতেন। তার ওফাতের পর তার স্ত্রীরা এতেকাফ করেছেন। (সহিহ বুখারি -২০২৬)
এসব হাদিসগুলো থেকে এতেকাফের গুরুত্ব ও তাৎপর্য প্রমাণিত হয়। এ বিষয়টিও প্রতিয়মান হয় যে, রাসুল (সা.) একজন সফল, আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক হওয়ায় হাজারো কাজে সদা ব্যস্ত থাকা সত্বেও নিয়মতি এতেকাফ করেছেন।
তাই আমাদের উচিত এই এতেকাফের প্রতি গুরুত্বারোপ করা, নানা ব্যস্ততার ভেতরেও যথাসাধ্য এতেকাফের চেষ্টা করা। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন
বিএনএনিউজ/ বিএম/শাম্মী