বিএনএ, ঢাকা : রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর বাড্ডা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় বুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধরের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২০ মার্চ) ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন এ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এ জন্য আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন নিখিল রঞ্জন ধর। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর শামীম আহমেদ আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। তবে ড. নিখিল রঞ্জন ধর পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গত ৫ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন নিখিল রঞ্জন ধর। ওই দিন আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাঁচটি ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) পদে এক হাজার ৫১১ জন জনকে নিয়োগ দিতে ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর বিকেলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। পরে ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর রাতে ডিবির কাছে তথ্য আসে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হবে। ডিবির টিমের সদস্যরা ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সেজে ৬ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অগ্রিম টাকা পরিশোধের পর প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপন ডিবির ছদ্মবেশী পরীক্ষার্থীকে নিয়ে যান। এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
২০২১ সালের ৬ নভেম্বর পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সঙ্গে সকালে পাওয়া প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে গেলে স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের সাভার শাখার শ্রীনগর থেকে জানে আলম মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সরবরাহকারী শামসুল হক শ্যামলকে ধরতে প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান চালানো হয়। পরে জানা যায়, শ্যামল ঢাকায় অবস্থান করছেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর ১০ নভেম্বর রাতে সোহেল, খোকন ও জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিএনএনিউজ/ বিএম