বিএনএ ডেস্ক:আগামী মাসেই রমজান। প্রতিবছরই রমজান মাস আসার আগেই বাজারে সকল ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে।
ক্রেতারা বলছেন, প্রতিবছর একটি শক্তিশালী চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। রমজান এলেই দাম বেড়ে যায় সকল পণ্যের। এর পিছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তাই অসাধুদের প্রতিরোধ ও নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় কিছু সংখ্যক পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে আগামীতে সরবরাহ ভালো হলে দাম কমতে পারে।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, মিরপুর-১ এর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে- গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর কিছু সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে করলা, বরবটি, টমেটো, চিচিঙ্গা, বাঁধাকপি, বেগুন, শিম, আলুর দাম। প্রতি কেজি করলা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, টমেটো ২৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা (আকারভেদে), বেগুন ৪০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, লতি ৭০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, আলু ২ টাকা বেড়ে ২০ টাকা কেজি, ও কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি, পটল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, খিরাই ৪০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, মটরশুঁটি ৫০ টাকা ও লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়।
এদিকে বাজারে আসা সজনের দাম ১০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
তবে গত সপ্তাহে দুই দফা পেঁয়াজের দাম বাড়লেও আজ তা কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে দুই দফা দাম বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। তবে পাকিস্তানি সোনালি বা কক মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এই মুরগির কেজি বিক্রি হয় ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা।
অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর মাংস ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে মিরপুর ১ এর ব্যবসায়ী মোসাররফ হোসেন বলেন, সামনে রমজান মাস। এর মধ্যে পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বেড়েছে। আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের ধারণা, শবেবরাতের আগেই মুরগির দাম আরো বাড়বে।
কেন দাম বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা খুচরা বিক্রেতা। আমাদের আসলে দাম বাড়ানো বা কমানোর বিষয়ে কোন হাত নেই। পাইকারি বাজারে হঠাৎ করেই দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রমজানের আগে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, তদারকির মাধ্যমে ইতোমধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, রমজানের আগে পণ্যের দাম কিছুটা কমে আসবে। সাধারণ ক্রেতারা রমজানে কোন ভোগান্তির স্বীকার হবেন না বলে আশা করছি।