বিএনএ, চট্টগ্রাম : কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার ফাঁসি! । বিষয়টা অবাক শুনালেও চট্টগ্রামে এমন একটা গর্হিত অপরাধের বিচারের রায় ঘোষণা করেন বিচারক। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় প্রদান করেন। এ সময় আসামি উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি হচ্ছে নাছির মোল্লা (৩৫) । নগরীর উত্তর পতেঙ্গা হাউজিং রোডের ডেবারপাড় এলাকায় নিজের ১২ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের করে এই পাষন্ড পিতা নাছির মোল্লা। নাছির মোল্লা (৩৫), ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া থানার পশ্চিম শৌলজালিয়া এলাকার মৃত জলিল মোল্লার ছেলে। উত্তর পতেঙ্গা ডেবার পাড় হাউজিং কলোনী রোড মনছুরের ভাড়া ঘরে থাকতেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামি নাছির মোল্লা কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ এর ৯(১)ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং তিন লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হলো। এ মামলায় মোট আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারী এ মামলার চার্জ গঠন হয়েছে । আসামি মো. নাছির মোল্লা ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে নিজের মেয়ে বলে অস্বীকার করেন। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় সে আসামির মেয়ে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
মামলার নথিতে জানা যায়, ভিকটিমের মা নগরীর সিইপিজেড একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত ছিল। ভিকটিমের পিতা নাছির মোল্লা ২০২১ সালে ২৫ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভিকটিমের মা বাসায় না থাকার সুযোগে একাধিকবার ধর্ষণ করে মেয়েকে। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল সকালে ভিকটিমের মা গার্মেন্টসে চলে যায়। চার্জে থাকা মোবাইলটি আনতে গেলে ভিকটিমের পিতা মেয়েকে বাসায় ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে একই বছরের ২৮ এপ্রিল পতেঙ্গা থানায় মামলা করে। পুলিশ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা একই ২৪ জুন অভিযোগ পত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারা অনুযায়ী- ধর্ষণের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত কারাদণ্ড। ১২ বছর বয়সী শিশুটি আসামি নাছির মোল্লার ঔরসজাত কন্যা হওয়া স্বত্ত্বেও সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিস্কে তাকে ধর্ষণ করেন এবং ভিকটিমকে নিজের কন্যা হিসেবে অস্বীকার করেন।
পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, কন্যা তার বাবার নিকট সর্বাধিক নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়। আসামি তার ঔরসজাত কন্যাকে ধর্ষণ করে শ্বাশ্বত, পবিত্র এই সম্পর্ককে কলুষিত করেছেন এবং পারিবারিক সম্পর্কের বন্ধন ও আস্থা-বিশ্বাসে আঘাত করেছেন। এর ফলে আসামির দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান সমীচীন হবে বিধায় মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো।
বিএনএ নিউজ/ ওজি