৬:৪১ পূর্বাহ্ণ - অক্টোবর ৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রোহিঙ্গাদের নিজদেশে ফেরত পাঠানোর এখন উপযুক্ত সময়

রোহিঙ্গাদের নিজদেশে ফেরত পাঠানোর এখন উপযুক্ত সময়

রোহিঙ্গা ক্যাম্প

মতামত।। নিরাপদে, মর্যাদার সাথে এবং পূর্ণ অধিকার প্রদানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে। মিয়ানমারের সামরিক সরকার তাদের ওপর শতবছরের বেশি সময় ধরে নির্যাতন করে চলেছে। মানবাধিকার বলতে তাদের জন্য কিছু নেই।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে যুদ্ধ চলছে। বিদ্রোহী সশস্ত্রগোষ্ঠি রাখাইনের তিন চর্তুথাংশ এলাকা দখল করে রেখেছে। এখন  জাতিসংঘ বাহিনী মোতায়েন করে সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। সেসাথে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, মর্যাদার সাথে এবং পূর্ণ অধিকার দিয়ে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে হবে।

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে। যেখানে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে কিছু রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কয়েকশ’র বেশি নয়৷ তাই যুক্তরাষ্ট্র বড় পরিসরে রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণ করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তবে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে সবচেয়ে দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র।

চলতি মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷ সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের সহায়তার জন্য বড় পরিসরে আহ্বান জানাতে পারেন৷

অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসলেও ইউরোপে পুনর্বাসনের সুযোগ কম দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের জন্য ইউরোপ অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদানেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে৷

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, তৃতীয় কোনো দেশে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহ থাকলেও অনেকেই মনে করেন, এই রোহিঙ্গা সংকটের প্রকৃত সমাধান হতে পারে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো৷

২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর হামলার মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়৷ এরপর ২০২১ সালে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান হলে আবারো বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আগমন বাড়তে থাকে৷
২০২৪ সালে রাখাইনে আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘাতে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হচ্ছে বাংলাদেশে। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গার সংখ্যা বার লাখেরও বেশি৷

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশের বাইরে ভারত, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডে প্রায় তিন লাখ ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন৷

বর্তমানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের আরাকানে ৬/৭লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে। কয়েকশ বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলমানরা আরাকান(রাখাইন)সহ সমগ্র মিয়ানমারে বসবাস করলেও বুড্ডিস্ট প্রধান দেশটিতে রোহিঙ্গাদের ভিন্ন চোখে দেখা হত। তাদেরকে বেঙ্গালিস বলে হেয় করা করা হয়। বাংলাদেশি বলে দাবীকরা হয়। অথচ ১০০ বছর আগেও ভারত বর্ষে বাংলাদেশ নামক কোন রাষ্ট্র ছিল না। মিয়ানমার থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত শাসন করতো ব্রিটিশরা।

বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে সহায়তা চেয়ে চেয়ে কত বছর লালন পালন করবে রোহিঙ্গাদের ? তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। মিয়ানমার সরকার উদ্যেগ না নিলে চীন ও জাতিসংঘ উদ্যেগ নিতে পারে। সমগ্র রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘ বাহিনী মোতায়েন করে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড,মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে থাকা ১৫/২০ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজ মাতৃভূমিতে পূর্ণ রাষ্ট্রিয় অধিকার দিয়ে পুনর্বাসন করা সম্ভব।

-সৈয়দ গোলাম নবী, বাংলাদেশ

মতামতের জন্য বিএনএ সম্পাদক/প্রকাশক দায়ি নন। এ মতামত লেখকের নিজস্ব।

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ