বিএনএ, চট্টগ্রাম : আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ঢাক-ঢোল মেরামত ও তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাদ্যযন্ত্র কারিগররা। এক সময় ঢাক-ঢোলের কারিগররা বাদ্যযন্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত থাকলেও আগের মতো সেই ব্যস্ততা দেখা যায় না। সময়ের প্রয়োজনে অনেকেই পাল্টে নিয়েছে পূর্ব পুরুষের এ পেশা। কিছু কারিগর তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কথা হয় কারিগর সহদেব মণি দাসের সাথে। তিনি পৌরসভার গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় গত ৮ বছর ধরে বাদ্যযন্ত্র মেরামতের কাজ করছেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার চাষাভাদ্রা গ্রামে। তার সাথে বাদ্যযন্ত্র মেরামতের কাজ করেন ছোট ভাই জয়দেব দাস।
সহদেব মণি দাস বলেন, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের কারণে উৎসব-অনুষ্ঠানে এখন ঢোলের কদর অনেকটা কমে গেছে। তবে পূজা-পার্বনে এখনও ঢাক-ঢোলের কদর রয়েছে। পূজার আরতিতে ঢাক-ঢোলের কোনো বিকল্প নেই। তাই বছরের এ সময়টাতে ব্যস্ত সময় পার করেন ঢুলি থেকে শুরু করে ঢোল-খোলের কারিগররা। পূজা ছাড়াও বিভিন্ন লোকসঙ্গীতের অন্যতম বাদ্যযন্ত্র হচ্ছে ঢাক-ঢোল।
জয়দেব দাস বলেন, পূজায় ঢাক-ঢোলের বাদ্য অপরিহার্য হলেও বর্তমানে সাউন্ড সিস্টেমের দাপটে সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বেড়েছে কাঠ ও চামড়াসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম। ফলে এখন তেমন লাভের মুখ দেখছেন না বাদ্যযন্ত্র তৈরির কারিগররা। আগের মতো দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা নেই। শুধু পূজা এলেই ঢাক-ঢোল, মৃদঙ্গের চাহিদা বেড়ে যায়। আধুনিক যন্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে এসব বাদ্যযন্ত্র হারিয়ে যেতে বসেছে। তারপরও চেষ্টা করছি বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে।
তিনি জানান, কারিগররা সারাবছর তেমন কাজ পায় না। এছাড়া দুর্গাপূজা এলেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে মৌসুমি কারিগররা। তাই অনেকে এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কথা হয় কানুনগোপাড়া এলাকার যন্ত্র কারিগর কার্তিক মণির সাথে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সব কিছুর দাম বাড়তি।চামড়ার দাম, গাছের দাম ও কারিগরদের বেতন দিয়ে ব্যবসা কোনমতে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হয়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢুলিরা ঢাক মেরামত ও বানাতে আসছে। সবাই তাড়াতাড়ি নিতে চায়। তাই একটু ব্যস্ততা বেড়েছে।
বিএনএ/ বাবর মুনাফ, ওজি