29 C
আবহাওয়া
৯:৪২ অপরাহ্ণ - জুন ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত


বিএনএ, মৌলভীবাজার: গত দুই দিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের নদ-নদীতে পানি বেড়ে গেছে। এতে চার উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। জেলার হাওর-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার, সদরে মনু নদীর পানি চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

টানা বৃষ্টিপাতে হাওরের পানি বেড়ে যাওয়ায় কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম এবং হাওরের পার্শ্ববর্তী নিম্নাঞ্চলের কয়েক শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। টানা বৃষ্টিপাত ও ধলাই নদীর পুরোনো ভাঙা বাঁধ দিয়ে ও পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলায় পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ।

জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত দু’দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল জেলার বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কমলগঞ্জের ধলাই নদীর পুরোনো ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। এতে উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বড়লেখায় খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে জানায় পাউবো।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, জেলার সবকটি নদীতে উজানে বৃষ্টি হওয়ায় পানিতে টইটুম্বুর। বাড়ছে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা, জুড়ি, কন্টিনালা ও ফানাই নদীর পানি। সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ক্রমাগত বৃষ্টি ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে। তার মধ্যে বড়লেখা উপজেলার চারটি, জুড়ি উপজেলার তিনটি, কুলাউড়া উপজেলার তিনটি, সদর উপজেলার চারটি এবং রাজনগর উপজেলার দুইটি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এরইমধ্যে জুড়ি, বড়লেখা এবং কুলাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ভুক্তভোগী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

মঙ্গলবার ভোর থেকে টানা বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার শহরতলীর কিছু অংশ, শ্রীমঙ্গল উপজেলার সবুজবাগ, লাল বাগ, রুপসপুর, সুরভীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে ও অনেকের বাড়িতে পানি ওঠায় ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।

মৌলভীবাজারের ইউএনওদের সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা এবং আশ্রয়কেন্দ্র সমূহে প্রয়োজনীয় ওষুধসহ খাবার ও পানির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

এদিকে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদীভাঙনের শঙ্কা। আতঙ্কে রয়েছেন নদী পাড়ের মানুষ। মনু, ধলাই, কশিয়ারা, জুড়ি, কন্টিনালা, ফানাইসহ নদীর অর্ধশতাধিক পয়েন্ট ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

হাওরের পানিতে বড়লেখা উপজেলার ৪টি, জুড়ি উপজেলার ৩টি, কুলাউড়া উপজেলার ৩টি, সদর উপজেলার ৪টি এবং রাজনগর উপজেলার ২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ