বিএনএ, ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত আরও দুই জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এই আন্দোলনের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে জীবন দিতে হয়েছে আল শাহরিয়ার হোসেন রোকন (২৩) নামে এক দিনমজুরকে এবং ওমর ফারুক (১৬) নামে এক কিশোরকে।
রোকনের বাবা মনির হোসেন বলেন, আমার ছেলে রোকন চকবাজার থেকে কম দামে বিভিন্নরকম পণ্য কিনে দোকানে দোকানে বিক্রি করতো। নিহত রোকন ১৫৫ পশ্চিম কাটাসুর হেদু চৌধুরীর বাসায় পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন। বাবা মনির হোসেন আরও বলেন, কাটাসুর ময়ুর ভিলার দিকে একটি দোকানে বিল কালেকশন করতে গেলে এই দুর্ঘটনার শিকার হন। গুলি লেগেছে এই খবর শুনে গিয়ে দেখি আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে সেখানে। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকরা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন এখানে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মোহাম্মদপুর বোর্ড গাঁট এলাকায় গত ৪ আগস্ট ওমর ফারুক নামের এক কিশোর গুলিতে নিহত হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই জানান, আমার ভাই ময়ূর ভিলার সামনে গিয়েছিল সেখানে তার বুকে কয়েকটি গুলি লাগে এই খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে তখন খুব গোলাগুলি চলছিলো যেতে পারিনি। পরবর্তীতে জানতে পারি আমার ভাইকে কয়েকজন মিলে সিকদার মেডিকেলে ভর্তি করেন। আমরা সিকদার মেডিকেলে যাই। সেখানে গেলে ডাক্তার বলেন আমার ভাই আর বেঁচে নেই। এই অবস্থায় আমার ভাইকে বাসায় নিয়ে এসে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করতে গেলে যখন শুনছে গুলি লেগে নিহত হয়েছে তখন কবরস্থানের দায়িত্বে থাকা তারা দাফন দিতে দেয়নি। কবরস্থানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বলেন, গুলিতে নিহত হওয়া লাশ পুলিশের ভ্যারিফাই ছাড়া দাফন হবে না। তখন যাই পুলিশের কাছে পুলিশ কোনো সহযোগিতা করে নাই। এরপর যাই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত সনদ আনতে সেখানেও কেউ সহযোগিতা করে নাই এই অবস্থায় আমরা একটি পিক আপ ট্রাকে করে লাশ ভোলা সদরে নুরাবদ এলাকায় নিয়ে দাফন করি। কথাগুলো বলতে বলতে কেঁদে দেন নিহতের ছোট ভাই।
নিহত ওমর ফারুকের মা এখনো অঝোরে কাঁদছেন আর বলছেন আমার ছেলেটির কি দোষ ছিলো, এতো ছোটো ছেলে কি বুঝে? তাকে কেনো গুলি করে হত্যা করা হলো। নিহত হওয়ার এক ঘন্টা আগেও মায়ের হাতে ভাত খেয়ে বাসার বাহিরে বের হয়েছিলো ওমর ফারুক।
বিএনএনিউজ/ আজিজুল হাকিম/ বিএম/হাসনা