27 C
আবহাওয়া
১২:১৭ পূর্বাহ্ণ - মে ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঈদের পর রাজপথে নামবে ১৪ দল!

ঈদের পর রাজপথে নামবে ১৪ দল!


বিএনএ, ঢাকা : ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, কিন্তু গোয়ালে নেই” এই প্রবাদটির সঙ্গে বর্তমান ১৪-দলীয় জোটের বেশ মিল রয়েছে। কাগজে-কলমে ১৪-দলীয় জোট থাকলেও বাস্তবে ১৪ দলের কোন কার্যক্রম নেই। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় শাসক দল আওয়ামী লীগেও গুরুত্ব নেই ১৪ দলের। ফলে এই জোটের প্রয়োজনও আছে বলতে চায় শরিকেরা।

YouTube player

বাস্তবে ১৪ দলের ভবিষ্যৎ দেখছেন না জোটের নেতারা। তাই আওয়ামী লীগের বাহিরে থাকা বাম ঘরানার অন্য শরিকেরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। তবে এখনই আওয়ামী লীগের সঙ্গ ছাড়ছে না ১৪ দল।

২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল গঠনের আগে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্বে বাম ঘরানার ১১ দলের একটি জোট ছিল। সেই জোটে সাম্যবাদী দল, বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টিসহ অন্যান্য দল ছিল। তারা একসঙ্গে ১৪ দলে যোগ দিয়েছিল। এর বাহিরে ন্যাপ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১৪ দলের শরিক হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ওয়ার্কার্স পার্টি আগের ১১-দলীয় জোটকে সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জাসদকেও পাশে চায় তারা। ১৪-দলীয় জোটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দর-কষাকষির ক্ষেত্রে জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছে। জোটে আওয়ামী লীগের বাহিরে সাংগঠনিকভাবে এই দুই দলেরই সারা দেশে তৎপরতা বেশি। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের বাহিরে ১৪ দলের বাম ঘরানার শরিকদের এই দুই দলের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আছে। এমনকি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও শরিফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে চায় আওয়ামী লীগের বাহিরে থাকা শরিকেরা।

আওয়ামী লীগ বাদে ১৪ দলের অন্য শরিকদের ঐক্যের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে এখন তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির মতো সর্বগ্রাসী ইস্যুতে ঈদের পর রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে জোরালোভাবে মাঠে নামতে চায়।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু শিল্পমন্ত্রীর বরই খাওয়ার পরার্মশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে যে ভাষায় কথা বলেছেন , তা বিরোধী দল বিএনপিও কখনো বলেননি। দলটি ইতো মধ্যে সীমিতভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে। তবে ঈদুল ফিতরের পর দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, প্রশাসনে দলবাজিসহ সরকারের নানা অনিয়ম-অসংগতি নিয়ে সভা-সমাবেশ ও মিছিল করবে। এটাকে জাসদ বলছে, সুশাসনের দাবিতে সংগ্রাম। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও রাজাকারবিরোধী অবস্থানও থাকবে দলটির।

হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ১৪-দলীয় জোট থাকবে কি না, সেটা সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগ। তবে জোটের এখন কার্যক্রম নেই। তিনি বলেন, জাসদ নির্বাচনের পর আভ্যন্তরীণভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। তাঁদের দলের এখন মূল কর্মসূচি হচ্ছে সুশাসনের জন্য সংগ্রাম। আর সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী অবস্থান। দলীয়ভাবেই এই লক্ষ্য অর্জনে রাজপথে থাকবেন তাঁরা।

১৪ দলের শরিক দলগুলোর সূত্র বলছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জোটের শরিক দলগুলো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। শরিক দলগুলোর অভ্যন্তরেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে; তৈরি হয়েছে সংকট।

শরিক দলগুলোর নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন, রাজনীতিতে তাঁদের প্রভাব কমে আসছে। ক্ষমতাসীন এই জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগও শরিকদের গুরুত্ব দিচ্ছে না। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আসন সমঝোতায় আওয়ামী লীগের সেই মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে। এমন মনোভাবের পেছনে আওয়ামী লীগের যুক্তি হচ্ছে, সহযোগিতা পেয়েও ১৪-দলীয় জোটের শরিকেরা ‘নিজেদের পায়ে’ দাঁড়াতে পারেনি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাসদ তিনটি, ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি ও জাতীয় পার্টি (জেপি) একটি আসন ভাগে পেয়েছিল। কিন্তু ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা এ কে এম রেজাউল করিম ছাড়া সবাই হেরেছেন। ২০০৮ সালের পর কোনো সংসদেই এত কম আসন পায়নি শরিকেরা। এরপর সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য পদে মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালান জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা। এতেও সুবিধা করতে পারেননি তাঁরা।
এমনকি এই জোটের ভবিষ্যৎ কী, এমন প্রশ্নও আলোচনায় এসেছে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে। শরিক দলগুলোর একাধিক নেতা বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সরকার গঠনের অনেকটা সময় পার হলেও বিপর্যস্ত শরিকদের নিয়ে আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেয়নি আওয়ামী লীগ।

তবে শরিক দলগুলোর কেউ কেউ মনে করছেন, জোটের শীর্ষ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলের একটা বৈঠক ডাকলে জোটে দূরত্ব কমে আসবে। নির্বাচনের পরপর জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টিসহ শরিক দলের দায়িত্বশীল নেতারা নিজেদের দলের ভেতরে চাপে পড়ে যান। তখন এই চাপ কাটাতে প্রধানমন্ত্রীর একটা সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন নেতারা। সেটা হয়নি বলে তাঁরা এখন অনেকটাই হতাশ।

বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ