আব্দুল করিম পাঠান ১৯৩০ সালের ১ এপ্রিল ময়মনসিংহের গোপালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক ভিটা নরসিংদী জেলার পলাশ থানার সুলতানপুর গ্রামে। তাঁর পিতার নাম-নজর আলী পাঠান এবং মাতার নাম-তাহেরুন্নেছা খাতুন।
তিনি ১৯৪৮ সালে চরসিন্দুর হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৫৪ সালে এম. এ পাশ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জে সার্ভে ইন্সপেক্টর হিসেবে সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯২ সালে বি.আই.ডব্লিউ.টি.এ থেকে ‘ডেপুটি ডিরেক্টর’ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
আব্দুল করিম পাঠান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরোধ বিষয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রচুর কাজ করেছেন এবং আজও করছেন। বর্তমানে অবসর জীবনে এলাকার স্থানীয় উন্নয়নসহ বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজের সাথে জড়িত আছেন।
১৯৫২ সালে আব্দুল করিম পাঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি দ্বিতীয় বর্ষ অনার্সের ছাত্র। থাকতেন ফজলুল হক মুসলিম হলে। ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনে আব্দুল করিম পাঠান সরাসরি জড়িত ছিলেন। একুশে ফেব্রুয়ারির হরতালকে সফল করতে তিনি বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রদের মাঝে প্রচার চালান এবং তাদেরকে একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ২০ ফেব্রুয়ারি সাইকেলে গ্রাজুয়েট স্কুলে যান এবং সেখানকার ছাত্রদের আমতলার সভায় যোগদানের আহ্বান জানান। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি আমতলার সভায় অংশ নিয়ে ছাত্রদের সংগঠিত করেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নেমে আসেন। একুশের রক্তাক্ত ঘটনারও তিনি প্রত্যক্ষ সাক্ষী। পরের দিনগুলোতেও তিনি আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন। ছাত্রাবাস বন্ধ হলে দেশের বাড়িতে এসেও ভাষা-আন্দোলন সম্পর্কে এলাকায় জনমত গড়ে তোলেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক (২২) অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান