35 C
আবহাওয়া
১:৫৮ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাঁশখালীতে গুলিতে ৫ শ্রমিক নিহত : ২ তদন্ত কমিটি

বাঁশখালীতে গুলিতে ৫ শ্রমিক নিহত : ২ তদন্ত কমিটি

বাঁশখালীতে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে ৫ শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ। পুলিশের তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন খান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাশেন ও ক্রাইম) জাকির হোসেন খানকে প্রধান করে রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার নেছার উদ্দীন ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত এসপি কবির হোসনকে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে একই ঘটনায় চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পুলিশের একজন, কলকারখানা অধিদফতর থেকে একজন এবং বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে একজনসহ মোট চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে করা হয়েছে।

এরআগে শনিবার সকালে বিভিন্ন দাবি পূরণ না করার জেরে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে পাঁচজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিন পুলিশসহ আহত হয়েছে আহত হয়েছে ২৩ শ্রমিক। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুলিবিদ্ধ আহত ১১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

শ্রমিকদের ১২ দফা দাবিগুলো হলো: ১. ১০ তারিখ বেতন দিতে হবে। ২. পানি ও বাথরুম ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। ৩. রমজান মাসে ৮ ঘন্টা করে ডিউটি করাতে হবে, কেননা ১০ ঘণ্টা ডিউটি করলে ইফতারের সময় পাওয়া যায়না। ৪. শুক্রবার অর্ধ কর্ম দিবস দিতে হবে, জুমার নামাজ পড়া ও বিশ্রামের সুযোগের জন্য। ৫. ঈদের বোনাস ৫০ % দিতে হবে। ৬. কোন শ্রমিক কাটিংয়ের (ছাঁটায়ের) ১ মাস আগে বলতে হবে এবং ছাঁটাইয়ের পর তার পাওনা বেতন দিতে হবে। যখন তখন হুট করেই ছাঁটাই করা যাবে না। ৭. অগ্নিকাণ্ডে কোন শ্রমিকের ক্ষতি হলে সম্পূর্ণ খরচ বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে। ৮. স্কেল অনুসারে শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে। ৯. ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও শ্রমিকরা বীমা ভাতা পাননা। তাই ইন্সুরেন্স সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ১০. কোন চাইনিজ বাঙ্গালি শ্রমিকদের গায়ে হাত দিতে পারবে না। ১১. সকাল ৭ টা থেকে ডিউটি দিতে হবে এবং ১২. সকল দাবি পূরণ হলে ডিউটিতে যোগ দেওয়া।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে-বিপক্ষের লোকজন ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে দুই ভাইসহ চারজন নিহত হয়েছিল। এ ঘটনায় আহত হয়েছিল ১১ পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন। সেখানে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল স্থানীয়দের একটি পক্ষ। ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য এসএস পাওয়ার লিমিটেড ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছিল।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসএস পাওয়ার লিমিটেড ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথ উদ্যোগে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ ভবনে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছিল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য গণ্ডামারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমি কেনা হয়েছে।

এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশের মালিকানা থাকবে এস আলম গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশের মধ্যে সেপকো ২০ শতাংশ এবং চীনের অপর প্রতিষ্ঠান এইচটিজি ১০ শতাংশের মালিক হবে। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর কেন্দ্রটিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও উৎপাদনে যেতে পারেনি তারা।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ