বিএনএ ডেস্ক: কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর আসল নাম মিনা পাল।১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। এরপর টেলিভিশন ও পরে সিনেমায়।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন কবরী। তারপর একের পর এক সফল সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন গেড়েছেন তিনি। চট্টগ্রামের মেয়ে মিনা পাল চলচ্চিত্রের লাল-নীল জগতে পা দিয়েই নতুন নাম পান ‘কবরী’। পরিচালক সুভাষ দত্তই তাকে এই নাম দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে বছরের ১৯ এপ্রিল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা থেকে প্রথমে গ্রামের বড়ি এবং পরে সেখান থেকে ভারতে চলে তিনি।
অভিনয়ের বাইরে রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে কবরীর কোনো সম্পর্ক ছিল না। এরপরও দেশের টানে ভারতে গিয়েও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সংগীত পরিচালক কলকাতায় পাড়ি জমান। তারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জমমত তৈরি, অর্থ ও পোশাক সংগ্রহ করতেন। সে সময় ভারতের ‘আকাশবাণী’তে কবরী বিশ্ববাসীর উদ্দেশে একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। যা মাঝেমধ্যেই বাজানো হতো।এই ভাষণ রনাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধা,দেশের মানুষসহ বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে যায়।
সে সময়ের একটি স্মৃতি তুলে ধরে কবরী বলেছিলেন, সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলেন। তখন কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে, সাধারণ মানুষ, একজন অভিনেত্রী এবং শিল্পী হিসেবে মানবতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। বাবা, মা, ভাই-বোন, সম্পদ, লোভ-লালসা সবকিছুর মায়া ত্যাগ করে ভাষণ দিয়েছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন বলে জানান এই অভিনেত্রী।
তিনি বলেছিলেন, দেশের জন্য লড়াই করতে পেরে গর্ববোধ করেন। সে সময় তার ছোট দুই শিশুও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী। এটাতার জন্য সবচেয়ে গর্ব ও সার্থকতার বিষয় বলে উল্লেখ করেছিলেন কবরী।
বিএনএনিউজ/আরকেসি