।। মো. গোলাম রব্বানী।।
যাতায়াতের জন্য বাসের সংখ্যা কম থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চরম পরিবহন ভোগান্তিতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। বাসের আসনের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী নিয়েই চলাচল করছে বাসগুলো। এমনকি জীবনের ঝুকি নিয়ে বাসগুলোর দরজায় ঝুলে ঝুলে চুয়েট আসা যাওয়া করে অনেক শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে তাড়াহুড়ো করে বাসে উঠতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থী লোকাল বাস কিংবা সিএনজি যোগে ক্লাসে যাচ্ছে ৷ ফলে সকালের ক্লাস-পরিক্ষায় সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারেন না অনেকে ৷ এদিকে শীতের সকালে লোকাল বাস এবং সিএনজির সংখ্যা কম থাকায় দূর্ভোগে নতুন মাত্রা যোগ হয় ৷
দীর্ঘদিনেও বাসের সমস্যা সমাধান না হওয়ায় প্রতিনিয়ত ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। ফলে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের এই সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন বাস ক্রয় করা হয়েছে । তবে চালক সংকটের কারণে নিয়মিত সিডিউলে নতুন বাস সংযোগ করা যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৩টি বাসের মধ্যে রোস্টার করে ২টি বাস শিক্ষক এবং ২টি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৷ তবে চট্টগ্রাম শহর থেকে চলাচল করা প্রায় ৬০০-৭০০ শিক্ষার্থীদের জন্য বাস বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫টি আবার কখনো ৬টি৷ ১৩ টি বাসে মধ্যে গত নভেম্বরের শুরুতে তুরাগ নামে একটি নতুন বাস যুক্ত হলেও আড়াই মাসে এখনও বাসটি পরিবহনে যুক্ত করতে পারেনি চুয়েট প্রশাসন। বাকি ২ বা ৩টি বাসের যান্ত্রিক সমস্যা রয়েছে এমন বরাত দিয়ে তথ্য দিয়েছে বাস চালক ও সংশ্লিষ্টরা। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য চুয়েট যানবাহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি৷
চুয়েট বাসে ভোগান্তির কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও তাড়িতকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘বাসসংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি তীব্র আকার ধারণ করেছে। সিএনজি এবং লোকাল বাসে ক্যাম্পাসে সময়মত ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে না পারায় ক্লাস-পরিক্ষায় সময়মত পৌঁছাতে পারিনা৷ কখনও বাসে উঠতে পারলেও দাঁড়িয়ে এমনকি অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণভাবে দরজার সামনে ঝুলে যেতে হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “যানবাহন সমস্যা আমরা দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি৷ নতুন বাসে চালক এবং সহকারী নিয়োগ এখনও হয়নি৷ নিয়োগ হলেই বাসটি পরিবহনে যুক্ত করব৷”
চট্টগ্রাম শহর থেকে চুয়েট ক্যাম্পাস প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূর ৷ চুয়েট থেকে শহরের উদ্দেশ্য ভোর ৬ টায় এবং শহর থেকে চুয়েটের উদ্দেশ্য সেই বাস সকাল ৭টা, চুয়েট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত বাস সিডিউল দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট এবং শহরের উদ্দেশ্য বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট এবং তা রাত ৯টায় শহর থেকে চুয়েটের উদ্দেশ্য রওনা হয়ে মোট চার শিফটে ক্যাম্পাস এবং চট্টগ্রাম শহরের রুটে নিয়মিত চলাচল করে চুয়েট বাস৷
বিএনএনিউজ২৪ডটকম