বিএনএ, ঢাকা: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন,ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে এর সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সবাইকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। কিন্তু এই স্বাধীনতা হঠাৎ করেই আসেনি। এর পেছনে রয়েছে শোষণ, নির্যাতন ও বঞ্চনার দীর্ঘ ইতিহাস। হাজার বছরেরও বেশি সময় শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের দুঃসহ পথ অতিক্রম করলেও বাংলা ভাষাভাষী এ জনপদের মানুষের কোনো স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র ছিল না। দীর্ঘ নয় মাসের লড়াই শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে মহাবিজয়। আর এ বিজয়ের পেছনে যে ব্যক্তিটি সার্বক্ষণিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীন দেশ, প্রজাতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সংবিধান প্রণয়ন, রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির রূপরেখার পরিকল্পনা, এসব কাজ একই সঙ্গে বিশ্বে আর কোনো মহানায়কই করতে পারেননি। ইতিহাস সেই গড়তে পারে যে নিজে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে পারে এবং অন্যদের দেখাতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকে ও অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে পারে। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী এবং বিশ্বস্ত বন্ধু। আমি গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের রাজনৈতিক নেতারা এবং জনগণ বাংলাদেশকে যে অদম্য নৈতিক সমর্থন দিয়েছিল। আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বীরদের যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু অনুসৃত ‘কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কূটনৈতিক অঙ্গনে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বমানবতার ইতিহাসে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। আমি আশা করি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানেও ভারতসহ বিশ্ব সম্প্রদায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিএনএ/ ওজি