বিএনএ, ববি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রলীগের কোন কমিটি না থাকলেও বিভিন্ন সময়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হয়েছে প্রতিবছর হয়েছে সংঘর্ষ ও মারামারি৷ সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ ঘটনায় প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় পায়ের রগ কেটে যায় আয়াতউল্লাহ নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীর৷
বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে পঙ্গুত্বের শিকার ছাত্রলীগ কর্মী আয়াত উল্লাহ তার উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ প্রকাশ্যে মদতদাতাদের শাস্তির দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন।
জানা যায়, আয়াতউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী আমরণ অনশনে বসেন। হামলাকারিদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।
আয়াত উল্লাহ বলেন, সন্ত্রাসীদের হামলায় আমি পঙ্গু হতে চলেছি। নৃশংস এই হামলার সাথে জড়িতদের পরিচয় প্রকাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনছে না। তাই বাধ্য হয়ে আমাকে অনশনে বসতে হলো। আমার ওপর হামলাকারিরা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে সাথে নিয়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠান করছে। কিন্তু কেউ আমার কোনো খোঁজ নিচ্ছেনা। পরিবর্তে আমাকে অনশন থেকে উঠিয়ে দিতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে । আমি গত সপ্তাহের বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে আমার ওপর হামলাকারিদের পরিচয় প্রকাশ করেছিলাম। তাদেরকে যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এবং গ্রেফতার না করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এই অনশন চালিয়ে যাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর মো. মাহফুজ আলম বলেন, আয়াতের অনশনের কথা শুনে আমি সেখানে গিয়েছি। তাকে বোঝানো হয়েছে যে, হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশক ড. তারেক মাহমুদ আবির জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থীর উপর এমন হামলা কাম্য নয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যেহেতু এই বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে আমি আশা করছি অতি দ্রুত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সুষ্ঠু বিচার করা হবে।
এ বিষয়ে সংঘর্ষের তদন্ত কমিটির প্রধান হারুন আর রশিদ ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৫ আগস্ট) ছাত্রলীগের রক্তিম -বাকি গ্রুপ ও রিদম-মঞ্জু এই দু’ গ্রুপের সংঘর্ষে বাম পায়ের রগ হারিয়ে পঙ্গুত্বের পথে আয়াত। আয়াত রক্তিম-বাকি গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী৷ হামলাকারিদের মধ্যে তিনি চারজনকে চিনতে পেরছেন বলে গত ৯ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে জানান। তার চিহ্নিত করা হামলাকারিরা হলেন- তানজিদ মঞ্জু (ইংরেজি বিভাগ- ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), রায়হান ইসলাম (গণিত বিভাগ- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), মোবাশ্বির রিদম (গণিত বিভাগ- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) এবং শরীফুল ইসলাম ( অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগ- ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ)।
বিএনএ/ রবিউল, এমএফ