28 C
আবহাওয়া
২:৩৪ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে গুরুত্ব হারাচ্ছে রাবি ছাত্রলীগ?

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে গুরুত্ব হারাচ্ছে রাবি ছাত্রলীগ?


।। সৈয়দ সাকিব।।

বিএনএ, রাবি: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটিতে মাত্র একটি পদে জায়গা পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের একজন নেতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আদনান হুসেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক পদে জায়গা পেয়েছেন। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ২২৬ জনকে বিভিন্ন পদে নতুন এই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই রাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা এ মূল্যায়নে অসন্তুষ্ট। তাদেরকে অপমানিত ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আরো ভালো মূল্যায়ন পাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন তারা। তারা বলছেন, শিবিরের চোখ রাঙানো উপেক্ষা ও লড়াই-সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় এই ইউনিটে। এখানকার নেতাকর্মীরা ত্যাগের রাজনীতি করে থাকে। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে মাত্র একজন নেতাকে পদ দেওয়া মানে এই ইউনিটকে অবজ্ঞা করার সামিল।

প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়ছেন নেতা-কর্মীরা

কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

রাবি ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক এবি হোসেন এক পোস্টে লিখেছেন, “বৃত্তের কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত দূরত্ব ২৪৬.৩ কিমি। কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত আলো পৌঁছাতে পারেনি। তাই আমাদের প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দৃষ্টি পড়েনি। রাবির মতো গুরুত্বপূর্ণ ও একই সাথে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সাংগঠনিক ইউনিটে জীবন-যৌবন সবটুকু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিশ্রম করে ছাত্রলীগ। কিন্তু এসব নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন এবং অপমান করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।”

রাবি শাখা ছাত্রলীগের উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয় বলেন, “যে ইউনিটে ৮ বছরে নতুন কমিটি হয় সে ইউনিট থেকে কীভাবে কেন্দ্রীয় ভাইটাল পোস্ট পাওয়ার মতো নেতৃত্ব তৈরি হবে। মেরুদণ্ড ও কর্মীহীন অবহেলিত ইউনিট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রে যারা পদ পাওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি ও রাজনীতি করছে তাদের মধ্যে শুধু রুবেল ভাই সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ পাওয়ার যোগ্য, আর বাকি সব হলের নেতা। তাহলে কাকে কেন্দ্রে পদ দিবে? কিবরিয়া (সভাপতি), রুনুকে (সম্পাদক)? তারাতো ৮ বছর থেকে খাচ্ছেই, পৃথিবীর সব কি দিবে ওদের? দুনিয়া কি এতটাই সহজ?”

কমিটিতে না থাকার পেছনে কী কারণ?

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের অনুপস্থিতি নতুন ঘটনা নয়। তথ্য অনুসন্ধানে করে দেখা যায়, সর্বশেষ ২০১৯ সালে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এমন মাত্র ২ জন নেতা জায়গা পেয়েছিলেন। এর আগে, ২০১৬ সালে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ৮ জনকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য পদ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা হলেন- তন্ময়ানন্দ অভি, সাহানুর ইসলাম শাকিল, সাকিবুল হাসান বাকি, মিনারুল ইসলাম, মেহেদী হাসান রাসেল, টগর মো. সালেহ, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, আখেরুজ্জামান তাকিম।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এবারের কমিটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদপ্রত্যাশী নেতার সংখ্যা তেমন একটা ছিল না। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের হল কমিটির সাথে যুক্ত কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী পদ প্রত্যাশা করেছিলেন; কিন্তু এদের কাউকেই পদায়ন করা হয়নি। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, মূলত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথে শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের পর্যাপ্ত যোগাযোগের অভাবের কারণেই শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত মূল্যায়ন করা হয় না। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে, রাবি শাখা ছাত্রলীগ থেকে ত্যাগী ও দক্ষ নেতাকর্মীও তৈরি হচ্ছে না; এটিও একটি কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে এ প্রসঙ্গে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শিবিরের সাথে লড়াই-সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়েছে। এখানে যে ত্যাগের রাজনীতি হয়ে থাকে, সেই হিসেবে আরও মূল্যায়ন পাওয়া উচিত ছিল। আমাদের এখানের অনেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ প্রত্যাশী ছিলেন; কিন্তু আমরা দেখলাম মাত্র একজনকে সেখানে স্থান দেওয়া হয়েছে।”

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান গণমাধ্যমকে বলেন, “এই অভিযোগগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। আমি নিজেও ঢাকার না, ঝালকাঠির; কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতিও রাজধানীর নয়, তিনি পঞ্চগড় থেকে এসেছেন। কমিটিতে পদায়নের ক্ষেত্রে আমরা চেয়েছি যেন দেশের সকল প্রান্তের প্রতিনিধিত্ব থাকে। এখানে কে কোন ক্যাম্পাসের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন, সেটি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।”

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ