বিএনএ ডেস্ক : কক্সবাজারের মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত দ্বিতীয় জেটিতে ভিড়েছে বাণিজ্যিক জাহাজ।বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘হরিজন-৯ নামে এ জাহাজ এসেছে সিঙ্গাপুর বন্দর থেকে। জাহাজটিতে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী রয়েছে।জাহাজটি ১২০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯ মিটার গভীরতা সম্পন্ন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ওই জেটিতে মূলত বিদ্যুৎকন্দ্রের নির্মাণসামগ্রীর জাহাজ ভিড়ত। এখন সেই বহরে নতুন একটি জেটি যোগ হওয়ায় একসঙ্গে দুটি জেটিতে পণ্য ওঠানামা করা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, মাতারবাড়ীতে দ্বিতীয় জেটি চালু হওয়ায় বাংলাদেশের উন্নয়নের চাকা আরো সচল হবে এবং সাথে সাথে বন্দরের সক্ষমতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে
চট্টগ্রাম বন্দরের সহকারী হারবার মাস্টার এবং মাতারবাড়ী জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর মূল সমন্বয়কারী ক্যাপ্টেন আতাউল হাকিম সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে জানান, ‘এত দিন মাতারবাড়ীর অয়েল জেটিতে জাহাজ ভিড়ত। গতকাল থেকে দ্বিতীয় জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো শুরু হলো। এই দিনটি সত্যিই গৌরবের। ১৭ জুলাই প্রথম জেটিতে ভিড়বে আরেকটি জাহাজ ‘থরো লিগ্যাসি’। ডিসেম্বর নাগাদ আরো বেশি পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানো যাবে।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর মাতারবাড়ী বন্দরে প্রথম প্রবেশ করে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘ভেনাস ট্রায়াম্প’। এর ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতা) ছিল সাড়ে পাঁচ মিটার। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে মাতারবাড়ি চ্যানেল। কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত চ্যানেলে এত দিন জেটি ছিল একটি। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী নিয়ে ভিড়তে পারত একটি জাহাজ।
কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের আগে প্রস্তুত হয় ২৫০ মিটার প্রস্থ, ১৮ মিটার গভীরতা এবং ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কৃত্রিম চ্যানেল। মূলত মাতারবাড়ীতে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মাণসামগ্রী আনতে এই চ্যানেল প্রস্তুত করা হয়।
পরে চ্যানেলটিকে সমুদ্র বন্দরের রূপ দিতে কাজ শুরু করে সরকার। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প।
দুই ধাপে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের মধ্যে। এর প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। বাকি অর্থের মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা
বিএনএ/ওজি