26 C
আবহাওয়া
১১:১৬ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » শাহ আমানত সেতু দিন দিন বিপদজনক হয়ে উঠছে!

শাহ আমানত সেতু দিন দিন বিপদজনক হয়ে উঠছে!


চট্টগ্রাম: জেলার কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত শাহ আমানত সেতুর (নতুন ব্রীজ) দক্ষিণ প্রান্তের এক্সপানশন জয়েন্টে দুই বছর আগে ত্রুটি ধরা পড়লেও তা নিরসনে সময় ক্ষেপন করছে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ।মন্ত্রাণালয়ে ফাইল আটকে থাকায় এতে সেতুটি দিন দিন বিপদজনক হয়ে উঠছে!

জানা যায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে জটিলতা তৈরি হওয়া এ সেতুর ত্রুটি ও ঝুঁকি চিহ্নিত করতে ঢাকাস্থ চীনের কিছু প্রকৌশলীরা সেতু পরিদর্শন করেন। তাঁরা সে সময় সেতুর ত্রুটি ও ঝুঁকি চিহ্নিত করে পরামর্শ দেন দক্ষিণ প্রান্তে রাম্বল স্ট্রিপস (গতিরোধক) বসানোর। সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুর্ঘটনা এড়াতে তাই বসায় ।কিন্ত  সেতুর এক্সপানশন জয়েন্টের ত্রুটি নিরসন হয় নি বলে জানা গেছে।

এদিকে, শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে স্পিড রাম্বল স্ট্রিপস (গতিরোধক) বসানোয় বাস কিংবা পণ্যবাহী ভারী যানবাহন কে
ব্রেক চাপতে হয়। এতে যানবাহনে তীব্র ঝাঁকুনি তৈরি হয়। এর ফলে বাইকার, বয়স্ক যাত্রী ও প্রসূতি নারীদের শারীরিক সংকট তৈরি হচ্ছে।

শাহ আমানত সেতু টোল প্লাজার ইজারাদার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কোম্পানি ইউডিসি-ভ্যান জেভি’র প্রজেক্ট ম্যানেজার সুমন ঘোষ জানান, ‘দক্ষিণ প্রান্তে সেতুর এক্সপানশন জয়েন্টে ত্রুটির বিষয়টি ঢাকার একটি সার্ভে টিম দেখে গেছেন।’

এছাড়াও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিতের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি জরিপে উঠে এসেছে, শাহ আমানত সেতুর দুই পিলারের নিচ বরাবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে ক্রমাগত মাটি সরে গিয়ে গভীরতা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়ছে। এর ফলে ভবিষ্যতে পিলারগুলো দেবে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকি তৈরি হয়েছে সেতুর জন্যও।
তবে সেতু নির্মাণকারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই পিলারের নিচ থেকে মাটি কিছুটা সরলেও এখনও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দীন বলেন, সেতুর এক্সপানশন জয়েন্টের বর্তমান পরিস্থিতি আমরা লিখিত ভাবে আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি।’

গত দুই বছরে ত্রুটি সংস্কারে সওজ কি ব্যবস্থা নিয়েছে জানতে চাইলে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরও বলেন,’ সেতুর ত্রুটি বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রাণালয়ে ফাইল গেছে। আপাতত আমরা সেতুতে রাম্বল স্ট্রিপস স্থাপন করেছি।’

কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু (তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবাল জানান ‘মূলত সেতুর এক্সপানশন জয়েন্টে কারিগরি জটিলতা তৈরি হয়েছে।’ চীনা প্রযুক্তিতে ১০০ বছরের আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করে নির্মিত সেতুটি ২০১০ সালে উদ্বোধনের ১১ বছর না যেতেই এই ধরনের ত্রুটি ধরা পড়েছে।

জানা যায়, ২০০৬ সালের ১৯ এপ্রিল তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১০ সালে। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধন করেন। ওই বছরেই সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ করেছিল।

সওজ সূত্রে জানা যায়, শাহ আমানত সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার ও প্রস্থ ২৪ দশমিক ৪৭ মিটার। এ সেতুটি ক্যাবল স্ট্যান্ড এক্সট্রা ডোজ কংক্রিট সেতু। চারলেন, ফুটপাত ও ডিভাইডারসহ সেতুর মূল দৈর্ঘ্য ৮৩০ মিটার। সেতুর মোট পিলার সংখ্যা ১০টি। এরমধ্যে নদীর মাঝখানে চারটি, সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে রয়েছে ছয়টি। চার লেনবিশিষ্ট এ সেতুটির সংযোগ সড়কও সমান প্রশস্ত।

কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু (তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু) দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাথে মূল শহর চট্টগ্রামসহ দেশের ৬২ জেলার যোগাযোগের অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সেতু।
এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ