বিএনএ, ঢাবি: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিরা সকাল সাড়ে ৭ টায় অপরাজেয় বাংলা পাদদেশ থেকে শোক র্যালি বের করে জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনস্থ টিভি কক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রো-উপচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোল্লা মো. আবু কাওছার, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিবাস চন্দ্র মাঝি সহ হলের ছাত্র নেতৃবৃন্দ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইরা উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নিহতদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৫ অক্টোবর এর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের সুরক্ষায় সংশ্লিষ্টদের সর্বদা সচেতন ও সক্রিয় থাকতে হবে। এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের সকলকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মূল্যবোধ-চেতনা ও দায়িত্বের জায়গা দুর্বল থাকলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। যখনই দেশে অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তখনই বিপর্যয় নেমে আসে। অসাম্প্রদায়িক, মানবিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক মূল্যবোধসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য উপাচার্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস পালনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বর্তমান প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দুবৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবং বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআ’সহ সকল হল মসজিদে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হবে। এছাড়া, নিহতদের তৈলচিত্র ও তৎসম্পর্কিত দ্রব্যাদি প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়। ওই দুর্ঘটনায় ২৬ জন ছাত্র, ১৪ জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০ জন নিহত হন এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী ও অতিথি আহত হন।
বিএনএ/মোছাদ্দেক, ওজি