26 C
আবহাওয়া
২:৫০ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » তালেবান মন্ত্রিসভায় দ্বন্দ্ব: কোন পথে আফগানিস্তান?

তালেবান মন্ত্রিসভায় দ্বন্দ্ব: কোন পথে আফগানিস্তান?

তালেবান

বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক, ঢাকা: গত সপ্তাহে ঘোষিত আফগানিস্তানে নবগঠিত তালেবান সরকারের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়েছে। গোষ্ঠীটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভার কাঠামো এবং আফগানিস্তান জয়ের কৃতিত্ব দাবি নিয়ে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।

মূলত তালেবান দুই ভাগে বিভক্ত। এর এক ভাগ কান্দাহারকেন্দ্রিক, আরেক ভাগ পক্তিকাকেন্দ্রিক। কান্দাহারকেন্দ্রিক তালেবানই হচ্ছে আদি তালেবান। কান্দাহারভিত্তিক মাদ্রাসা ছাত্রদের নিয়ে এই ভাগ গড়ে উঠেছিল। আর পূর্ব আফগানিস্তানের পক্তিকাভিত্তিক তালেবানের যে দল রয়েছে, সেটি গঠিত হয়েছে মূলত হক্কানি নেটওয়ার্ক ও হেকমতিয়ার গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে। এটি পাকিস্তানসংলগ্ন এলাকা এবং এই পক্তিকা উপদলের সদস্যরা প্রকৃত তালেবান বা মাদ্রাসা ছাত্রদের নিয়ে গঠিত উপদল নয়। এরা যুদ্ধবাজ নেতাদের ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।

বারাদার-হাক্কানি বিতর্ক

তালেবানের একটি সূত্র বিবিসি পশতুকে জানিয়েছে, তালেবান নেতাদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট প্যালেসে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান মন্ত্রিসভার উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের সঙ্গে তালেবানের প্রভাবশালী নেতা ও শরণার্থী মন্ত্রী খলিল উর রহমান হাক্কানির কথা-কাটাকাটি হয়েছে। এ সময় এ দুই নেতার সমর্থকেরাও তর্কে জড়িয়ে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো নিয়ে অসন্তোষের জেরে এ ঘটনা ঘটে বলেও উল্লেখ করেন কাতারভিত্তিক ওই সিনিয়র তালেবান সদস্য।

এ দ্বন্দ্বের কারণের মধ্যে আফগানিস্তান জয়ের কৃতিত্বের বিতর্কও রয়েছে। বারাদার বিশ্বাস করেন যে তার মত লোকদের দ্বারা পরিচালিত কূটনীতির কারণেই এ জয় এসেছে। ২০২০ সালে প্রথম তালেবান নেতা হিসেবে বারাদার একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের (ডোনাল্ড ট্রাম্পের) সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেন। এতে সেনা প্রত্যাহার সহজ হওয়ায় জয় এসেছে বলে তিনি মনে করেন। সামনেও কূটনীতিকে গুরুত্ব দেয়ার মত তার।

তালেবানের আজকের খবর

অন্যদিকে, হাক্কানি গ্রুপের সদস্যরা বলছেন যুদ্ধের মাধ্যমে এ বিজয় অর্জন করা হয়েছে। পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে সংঘটিত সবচেয়ে হিংস্র হামলার সঙ্গে জড়িত এই অংশটি যুদ্ধকেই জয়ের কৃতিত্ব দিতে চায়। এই গ্রুপের নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি নতুন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তালেবানের পক্ষ থেকে দ্বন্দ্বের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

এদিকে, গত সপ্তাহের শেষের দিক থেকে মোল্লা আবদুল গনি বারাদারকে জনসম্মুখে দেখা না যাওয়ায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে বারাদার মারা যেতে পারেন। তবে তালেবান সূত্র জানিয়েছে, তিনি কান্দাহার শহরে আছেন।

এর আগে গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। পরে দেশটিকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নিয়ে একটা ঐকমত্যের সরকার গঠনের কথা বলে আসছিল তালেবান। কিন্তু বাস্তবে সে কথা রাখেননি গোষ্ঠীটির নেতারা। গত সপ্তাহে ঘোষিত সরকারের কোনো শীর্ষ পদেই নারীদের জায়গা দেয়া হয়নি।

ঐকমত্যের অভাব

ইতিমধ্যেই তালেবানের এই সরকার নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে, জাতিসংঘ বলেছে, তালেবান সরকারে ‘ঐকমত্যের অভাব’ রয়েছে।

এছাড়াও দীর্ঘদিনের যুদ্ধ-সংঘাত দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থাকে সংকটময় করে তুলেছে। এরিমধ্যে তীব্র আর্থিক সংকটে পড়ে দেশটির অনেক বাসিন্দা তাদের প্রতিদিনের ব্যবহার করা আসবাবপত্র বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতেই তারা এমনটি করছেন।

এর আগে গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ সতর্ক করেছিল যে, ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে আফগানিস্তানের ৯৭ শতাংশেরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ,জিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ