বিএনএ, ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সোমবার (৫ আগস্ট) ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে ছাত্র জনতা।আওয়ামী লীগ যদি আবার দেশে একটি পাল্টা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র অ্যান্দোলনের অন্যতম সমন্বয় সারজিস আলম।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে রেজিস্ট্যান্স উইক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী যে ছাত্র আন্দোলন করেছিলাম, ছাত্র-জনতার যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে এরপর আর আমাদের রাজপথে নামার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ও ফ্যাসিজমের দোসররা এখনো চক্রান্ত করছে। বিভিন্ন অপচেষ্টা করে যে ফায়দাটি লুটার চেষ্টা করছে সেটি প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্র-জনতাকে আবার রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আমরা চাইনা আমাদের রাস্তায় নামার মাধ্যমে আমাদের একজন ভাইবোনের চলাফেরায় বিন্দুমাত্র অসুবিধা হোক। কিন্তু দেশ যখন সংকটে পড়ে যায়, তখন আমাদের কষ্ট করে হলেও রাস্তায় নামতে হয়। কারণ দেশ যদি দিনশেষে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। সে জায়গা থেকে আমরা ছাত্র-জনতা আজকে আবার রাস্তায় নেমে এসেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার দফার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা রেজিস্ট্যান্স উইক কর্মসূচি দিয়েছি। এই জায়গা থেকে বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের কাছে খবর আসছে তাদের কিছু দোসর শয়তানকে নিয়ে তারা একটি পাল্টা গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে চায়৷ তারা যদি তাদের জায়গা থেকে কোনো নোংরা পরিকল্পনা করে, এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য আমরা ছাত্র-জনতা এই রেজিস্ট্যান্স উইক কর্মসূচি দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দেশের বর্তমানে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে আমরা বিশ্বাস করি সেটি ছাত্র জনতার সরকার। আমরা আমাদের দাবির বিষয়ে তাদেরকে চাপে রাখবো। তো আমরা এটাও বিশ্বাস করি তাদের সে সদিচ্ছা রয়েছে। তারা আমাদের দাবিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মেনে নিবে। আমাদের এই সরকারের ওপর আস্থা আছে। আমরা বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেগুলো করবে। কিন্তু তাদের মধ্যে যদি আমরা কোনো অবহেলা দেখি, তাহলে আমরা বলে দিচ্ছি, আমরা তাদেরকে যেমন ওই গদিতে বসাতে পারি, তাদেরকে আমরা নামাতেও পারি৷ আমরা তাদেরকে সাবধান করে দিচ্ছি, আমরা জানি কোন কাজটা করতে কতটুকু সময় লাগে। ততটুকু সময়ের মধ্যে এই কাজটি অবশ্যই হতে হবে। তা না হলে ছাত্র-জনতা এই শাহবাগের মঞ্চ থেকে পুরো বাংলাদেশে আবার তাদের বিরুদ্ধেও কথা বলবে।
শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেখেছেন কোথাও যদি একটি পিলারও হয় সেই পিলারের ক্রেডিট ওই হাসিনাকে দেওয়া হতো৷ তাহলে এই দেশে নামে বেনামী হিসাবে হাজারের ওপর যে আমার ভাই বোনকে হত্যা করা হয়েছে তার ক্রেডিটটি কার কাছে যায়?
এই সাম্যের বাংলাদেশে আমরা চাই ওই শেখ হাসিনারও এমন একটি বিচার হোক যেটি এক পেশে নয়৷ পুরো বাংলাদেশ পুরো পৃথিবীর মানুষ ন্যায্যতার ভিত্তিতে তার বিচার করুক। আমরা আমাদের জায়গা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে তার শাস্তি চাই।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এদেশের জনগণ যদি মনে করে এই খুনের দোসরদের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই তাহলে জনগণের পক্ষ থেকে আমরা সেই দাবি তুলবো।
বিএনএনিউজ/ রেহানা/ বিএম