বিএনএ ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে রাতভর উত্তপ্ত ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রোববার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে চলামান কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেনো? তাদের নাতিপুতিরা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য অপমানজনক। এ মন্তব্যের ফলে চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার পায়তারা। তাই আমরা এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে আন্দোলনে সমর্থনকারী দুই শিক্ষার্থীকে আটকে রাখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাই আমরা তাদের মুক্ত করতে হল প্রাঙ্গণ ঘেরাও করি। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। হামলায় আমাদের একজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রতিবাদে রোববার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। তখন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে দুজন আন্দোলনকারীকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এই খবর জানাজানি হলে মিছিলটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ঘেরাও করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে আমরা একটি বিক্ষোভ মিছিল ও জমায়েতের ডাক দিয়েছিলাম। এতে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা জমায়েত শুরু করলে ২ শিক্ষার্থীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রলীগ তাদের ক্যান্টিন কক্ষে আটক করে রাখে। পরে আমরা আটককৃতদের মুক্ত করার জন্য এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ঘেরাও করেছি। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বিক্ষোভে হামলা করে।
ছাত্রলীগ কর্তৃক আটককৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কাওসার আলম আরমান ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক মাহমুদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইপক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শেষে তিনি বলেন, ‘দু’পক্ষের অভিযোগ শুনেছি। এ ঘটনা যেহুতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ঘটেছে, তাই নিয়ম অনুযায়ী, একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটনার তদন্ত করা হবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে চেয়েছি। আজ (সোমবার) সকাল ১১টায় তাদের আমার সঙ্গে দেখা করতে বলেছি।’
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ