30 C
আবহাওয়া
২:৫১ অপরাহ্ণ - জুন ৭, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » এনসিপি’র ছোট দরবেশ যেভাবে হাতিয়ে নিলো ৪০০ কোটি টাকা!

এনসিপি’র ছোট দরবেশ যেভাবে হাতিয়ে নিলো ৪০০ কোটি টাকা!


।।রেহানা ইয়াছমিন।।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র একটি সিন্ডিকেট জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বই ছাপার জন্য কাগজ কেনা খাতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে। এই দুর্নীতির পেছনে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছোট দরবেশ খ্যাত এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীর। শুধু তাই নয়- সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসক, পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে থানার ওসি পর্যন্ত প্রভাব খাটিয়ে তদবির বাণিজ্য করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

YouTube player

অনুসন্ধানে জানা যায়, পাঠ্যবই পরিমার্জনের নামে সময়ক্ষেপণের সুযোগে তানভীর ও তার ঘনিষ্ঠ একটি চক্র এনসিটিবিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কয়েক হাজার টন কাগজ আমদানি করায় এবং শুল্ক মওকুফ করিয়ে নেয়। এই আমদানিকৃত কাগজ প্রেস মালিকদের বাজারমূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে কিনতে বাধ্য করা হয়। এতে প্রতি টনে ৫০ হাজার টাকা করে বেশি আদায় করা হয়, যার মাধ্যমে প্রায় ৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুধু আমদানিকৃত কাগজ নয়, দেশীয় কাগজ সরবরাহের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট প্রেস মালিকদের চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে তানভীরের বিরুদ্ধে। এভাবে পুরো প্রক্রিয়ায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
গাজী সালাউদ্দিন তানভীর এনসিটিবির চেয়ারম্যানের নাম ব্যবহার করে একপ্রকার অলিখিতভাবে বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এনসিটিবির কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে গোপন সমঝোতায় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ কেনায় বাধ্য করা হয়।

এই অভিযোগ সামনে আসার পর এনসিপি গত ২১শে এপ্রিল এক চিঠির মাধ্যমে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়। চিঠিতে জেলা প্রশাসক নিয়োগে অবৈধ প্রভাব এবং এনসিটিবির কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়।

অতপর, বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান শুরু করে। দুদক অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত গোপন তথ্য যাচাই শেষে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

তানভীরের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি সচিবালয়ে প্রবেশের অনুমতিপত্র না থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে নিয়মিত সেখানে প্রবেশ করতেন এবং বিভিন্ন বদলির তদবিরে জড়িত ছিলেন বলে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসে।

তবে সংবাদ সম্মেলন করে তানভীর তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ১৩ মার্চ কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি এক পয়সা দুর্নীতির প্রমাণ মেলে, আমি নিজেই দল থেকে পদত্যাগ করব।’

তিনি দাবি করেন, ‘১০০ কোটি টাকার কাগজ কেনা হয়েছে, অথচ বলা হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এসব তথ্য বিভ্রান্তিকর।’

তবে রাজনৈতিক মহল ও সংশ্লিষ্ট মহলে তানভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ডিসি নিয়োগে তিন কোটি টাকার চেক গ্রহণে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীর সামনে থাকলেও আড়ালে রয়েছে এনসিপির একজন সমন্বয়ক। যিনি এক সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ওই সমন্বয়কই তানভীরের গডফাদার। ছোট দরবেশ নামে পরিচিত এনসিপির যুগ্ম সম্পাদক থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রাপ্ত সালাউদ্দিন তানভীর ছিল ক্যাশিয়ার মাত্র। দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আয় করেছে এনসিপির ওই সমন্বয়ক।

বিএনএ/ ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ