বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরে কাগজের ঘোষণা দিয়ে বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেট আমদানি করায় কন্টেইনার জব্দ করলো কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ। জব্দ করা কন্টেইনারের মধ্যে রয়েছে ২৩ হাজার কার্টন (৪৬ লাখ শলাকা) ইজি এবং মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ চালানে আমদানিকারকের চুরি ও সিএন্ডএফের চতুরতা ধরার কথা জানান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) এর সহকারী কমিশনার মো. রেজাউল করিম।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন বাজারের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান করিম ট্রেডিং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এফোর সাইজের কাগজ ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। পণ্যচালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুরমা এন্টারপ্রাইজ কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি (নম্বর সি-২২১১৮৬) দাখিল করে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রফতানিকারক, তৈরি দেশ প্রভৃতি এনালাইসিস করে এনবিআরের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রিটি লক করে রাখে। এরপর রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নিয়ম অনুযায়ী পণ্য পরীক্ষা শুরু করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এআইআর টিম।
সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, কন্টেইনারের সামনের দিকে রাখা সুসজ্জিত কাগজ দেখিয়ে কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। কন্টেইনারের ভেতরের পণ্য বের করার জন্য সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিকে অনুরোধ করলে তারা গড়িমসি শুরু করে এবং একপর্যায়ে কায়িক পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য পাল্টা অনুরোধ করে। তৎপ্রেক্ষিতে কাস্টম কমিশনারের নির্দেশে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, বন্দর ও সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে রাতেই পণ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয় এআইআর শাখা।
তিনি বলেন, কন্টেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টন রয়েছে যার উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং পরবর্তী ৩৬ কার্টন খুলে উপরে এক রিম এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায়। কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট।
রেজাউল করিম বলেন, কন্টেইনারের প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী ৪৮টি প্যালেটে পাওয়া যায় লুকানো সিগারেট। রাত আনুমানিক ২টায় শেষ হওয়া পরীক্ষায় ৪৬ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার। এ সময় তিনি দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এরূপ দু:সাহস দেখাতে না পারে।
কন্টেইনারে এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায় ১৪ টন। পণ্য চালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে প্রায় ১১ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছে বলে জানান কাস্টমস হাউসের এ কর্মকর্তা।
বিএনএনিউজ/মনির