বিএনএ ডেস্ক: সংবিধান অনুযায়ী দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত থাকবে। সংবিধানের বাইরে যাওযার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মহাজোটে আগে যারা ছিল তারা আছে নির্বাচনেও থাকবে। কোন দল সাথে থাকতে না চাইলে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। বলেন, আওয়ামী লীগ তৃণমূলেও উন্নয়ন করেছে। এতো কাজ করায় জনগণ অবশ্যই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় আছে। ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এ দেশে বার বার ক্যু হয়েছে। দেশের গণতান্ত্রিক ধারা বার বার ব্যহত হয়েছে। তখন মানুষের কথা বলার ও চলাফেরার স্বাধীনতা ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলা ও সমালোচনা করার স্বাধীনতা পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তিন বছর বিরতির পর এবারের ভারত সফরের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। ভারতের কাছ থেকে যথেষ্ট আন্তরিকতা পেয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের সব দল-মত একসাথে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে কি পেলাম এমন প্রশ্ন আপেক্ষিক। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানে চারদিকে ভারত। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে সব বিষয়েই সহযোগিতা পাচ্ছি। একেবারে শূণ্য হাতে এসেছি এটা বলা যাবে না। এত কিছু করার পরও বিএনপি বলে কিছুই হয়নি। এটা তাদের মানসিকতা আর আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে সবকিছু বাঁকা চোখে দেখা। ভারতেও এমন কিছু মানুষ আছে। বাস্তব কথা হলো, বাংলাদেশ সবসময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে। এটা রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। মাঝে মধ্যে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটানো হয়, সেসব দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হয় বলেও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগের উপরে উঠে যেতো উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সামনে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে যাচ্ছে। এত খারাপ অবস্থা আসতে পারে কেউ ভাবতেও পারবেন না। নিজেদের খাবারের যোগাড় করে রাখার পাশাপাশি যেকোন পরিস্থিতি সামাল দিতে সঞ্চয় করার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ভুটান-নেপাল-ভারত-বাংলাদেশে যোগাযোগ উন্নত করা হচ্ছে। আমাদের বন্দরগুলো তারা ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। এ যোগাযোগ এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও যোগাযোগ বাড়বে। দরজা বন্ধ করে রেখে কোন লাভ নেই।
অর্থপাচার ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। সুইস ব্যাংকের কাছে আগেই ডিমান্ড পাঠিয়ে তালিকা চাওয়া হয়েছিলো, তারা দেয়নি। অর্থপাচারের বিষয়টা নজরদারিতে আনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন অনেকেরই অর্থপাচারের তথ্য আছে, গণমাধ্যমগুলো তা লিখবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। সামনে একে একে সব প্রকাশ করা হবে।
রোহিঙ্গাদের পুর্নবাসন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতের সাথে আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘদিন তাদের অবস্থানে আমাদের সংকট হচ্ছে। তারা নিজেরাও নিজেদের মধ্যে নিরাপত্তা পরিবেশ নষ্ট করছে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতকে সহায়তা করার কথা বলেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন , তারা এ বিষয়ে ইতিবাচক। ভারত মনে করে এটার সমাধান হওয়া উচিৎ। শেখ হাসিনা বলেন, দিন দিন রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে যাচ্ছে। তবে তারাতো মানুষ, ফেলে তো আর দিতে পারি না।
বিএনএ/এ আর