17 C
আবহাওয়া
৪:৩২ পূর্বাহ্ণ - জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » জয় পাচার করেছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা!

জয় পাচার করেছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা!


বিএনএ : বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে ৩০ কোটি ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- এফবিআই-এর তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে জয়ের ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং ৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।

২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল মার্কিন বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এফবিআইয়ের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এফবিআইয়ের প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশন হাতে পেয়েছে। এফবিআইয়ের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে।

এফবিআই জয়ের মালিকানাধীন ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৭৮ ডলারের – ম্যাকলারেন ৭২০এস, ১ লাখ ৯ হাজার ৮০৬ ডলার মূল্যের মার্সিডিজ বেঞ্জ এএমজি জিটি, ৫১ হাজার ৮ ডলারের মার্সিডিজ বেঞ্জ এস-ক্লাস, ৭৩ হাজার ৫৭০ ডলারের এসএল শ্রেণির মার্সিডিজ বেঞ্জ, ৩০ হাজার ১৮২ ডলারের লেক্সাস জিএক্স ৪৬০, ৩৭ হাজার ৫৮৬ ডলারের রেঞ্জ রোভার, ৭ হাজার ৪৯১ ডলারের জিপ গ্র্যান্ড চেরোকি এবং ৪ হাজার ৪৭৭ ডলারের গ্র্যান্ড চেরোকি। তবে জয় দাবি করেন, এসব গাড়ি অনেক পুরোনো এবং অধিকাংশই বহু আগে বিক্রি হয়ে গেছে।

এফবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডে সজীবের ব্যাংক হিসাব খুঁজে পেয়েছে। স্থানীয় একটি মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও লন্ডনে সন্দেহজনক অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি জানা যায়।

জয়ের সন্দেহজনক কার্যকলাপ খতিয়ে দেখতে এফবিআই যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অনুসন্ধানগুলো সম্ভাব্য অবৈধ ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন।

এফবিআইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে মার্কিন বিচার বিভাগের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলসের যোগাযোগ হয়। তিনি বাংলাদেশ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার চুরি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার সংক্রান্ত একটি মামলায় ওয়াশিংটন ফিল্ডের সহায়তা চেয়েছিলেন। তবে ফেসবুক পোস্টে সজীব ওয়েজদ জয় দাবি করেন, রিপোর্টে যে এফবিআই এজেন্টের কথা বলা হয়েছে তিনি বহু বছর আগেই সংস্থা থেকে অবসর নিয়েছেন। বিচার বিভাগের যে আইনজীবীর কথা বলা হয়েছে, তিনি ২০১৩ সালে মারা গেছেন। তার মৃত্যু সংবাদের খবরের লিংক শেয়ার করেন জয়।

হাসিনা ও সজীব যুক্তরাষ্ট্র ও কেম্যান আইল্যান্ডে অর্থ পাচার করেছেন উল্লেখ করে এফবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচার বিভাগের সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ বা মানি লন্ডারিং বিভাগ এসব তহবিল খুঁজে বের করতে, সংযত করতে, জব্দ করতে ওয়াশিংটন ফিল্ডের সহায়তা চেয়েছিল। তদন্তে ওয়াজেদ কনসাল্টিং ইনকর্পোরেটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক কার্যকলাপও ধরা পড়েছে। ওয়াজেদ কনসালট্যান্ট বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অসংখ্য ব্যবসায় নিয়োজিত ছিল এবং বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট প্রকল্পের সাথে যুক্ত ছিল। তবে জয় দাবি করছেন, তার কোনো অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই।

তদন্তে ম্যাসাচুসেটস ও ভার্জিনিয়ায় সজীব ওয়াজেদ জয় ও সজীবের স্ত্রী ক্রিস্টিনার সঙ্গে সন্দেহজনক ব্যাংক কার্যক্রমের তথ্যও পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। জয় তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘ক্রিস্টিনা এবং আমি আর বিবাহিত নই। আমরা প্রায় তিন বছর আগে আলাদা হয়েছি এবং আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।’

এফবিআইয়ের প্রতিবেদনে তাদের গোপন তথ্যদাতা জয়ের দুই সহযোগীর নামও জানিয়েছেন। তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্র মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী। গোয়েন্দা সংস্থাটি ওয়াজেদ কনসাল্টিং, ইকম সিস্টেমস, এমভিয়ন ও ইন্টেলিজেন্ট ট্রেড সিস্টেমস লিমিটেডসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে সজীবের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে।

তবে সজীব ওয়াজেদ জয় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেছেন। সোমবার রাতে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে জয় লিখেন, সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন -এফবিআই এর একটি রিপোর্ট ফাঁস করে। জয় দাবি করেন, রিপোর্টটি ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ভরা। রিপোর্টে কয়েকটি গুরুতর ভুল রয়েছে বলেও জানান হাসিনাপুত্র।

বিএনএনিউজ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ