বিএনএ, চট্টগ্রাম: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এল এ শাখার সাবেক কানুনগো এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কানুনগো হিসেবে কর্মরত সুশীল বিকাশ চাকমা (৫৬)-কে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মুন্সী আবদুল মজিদ আদালত এই আদেশ দেন।
সুশীল বিকাশ চাকমা রাঙামাটি সদরের সাপছড়ির রবিচন্দ্র চাকমার ছেলে। তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া তালিকার চার নম্বর আসামি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতির মামলায় আসামি সুশীল বিকাশ চাকমা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, কানুনগোসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আউটার লিংক রোড প্রকল্পে ভুয়া মালিকানা সাজিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই চট্টগ্রাম আউটার লিংক রোড প্রকল্পে ভুয়া মালিকানা সাজিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে দুদক। কিন্তু চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নেন। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে মামলাটি।
দুদকের এই মামলায় পলাতক রয়েছেন- মাবিয়া খাতুন, ছকিনা খাতুন, মো. নুর চৌধুরী ও দেবতোষ চক্রবর্তী।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেবতোষ চক্রবর্তী দুদকের দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি। যা স্পেশাল মামলা নং-৬১/২০২২, কোতয়ালী থানার মামলা নম্বর ০২(১)২০১৯, এসি.সি.জিআর ০১/১৯ ধারা ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা। দেবতোষ চক্রবর্তী ও সুশীল বিকাশ চাকমাসহ ৬ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এবং মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশ গেজেট হিসেবে গত ১ মার্চ প্রকাশিত হয়।
আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম ডিসি অফিসের দেবতোষ একের ভিতরে তিন!
দুদক মামলা দায়ের হওয়ার পর দেবতোষ চক্রবর্তীকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। শাস্তি এতটুকুতে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু করিৎকর্মা দেবতোষ চক্রবর্তী সব কিছু ম্যানেজ করে ফের চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে বদলি হয়ে আসে। শীর্ষ কর্মকর্তাদের আশির্বাদ দেবতোষ চক্রবর্তীর ওপর আগেও ছিল, এখনো আছে, আগামীতে থাকবে! এমন মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সৎ কর্মকর্তা কর্মচারিরা। এছাড়া সুশীল বিকাশ চাকমা আত্মসমর্পণ করার পর দেবতোষ চক্রবর্তীও আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করবে বলে তারা জানান।
বিএনএ/এমএফ