বিএনএ,ঢাকা : আজ (বুধবার) ৩০ চৈত্র বাংলা বর্ষ ১৪২৮ বঙ্গাব্দের শেষ দিন। চৈত্র মাসের শেষ এ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। বাংলার বিশেষ লোকজ উৎসব এই চৈত্র সংক্রান্তি। চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালির কাছে চৈত্র সংক্রান্তি পরিণত হয়েছে এক বৃহত্তর লোক উৎসবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে একটি অত্যন্ত পুণ্যদিন বলে মনে করে। হিন্দু পঞ্জিকা মতে দিনটিকে গণ্য করা হয় মহাবিষুব সংক্রান্তি নামে।
নদীতে বা দীঘিতে পুণ্যস্নানে হিন্দুু ধর্মাবলম্বীরা এইদিনে পিতৃপুরুষের তর্পণ করে থাকে। আজ সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে কালের অতল গর্ভে হারিয়ে যাবে আরও একটি বছর। আগামীকাল নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালিরা নববর্ষ ১৪২৯ কে বরণ করে নেবে। চৈত্র সংক্রান্তি বাংলার লোকসংস্কৃতির এমন এক অনুষঙ্গ যা সর্বজনীন উৎসবের আমেজে বর্ণিল। বাঙালি বছরের শেষদিনে বর্ষ বিদায়ের পাশাপাশি বৈশাখ বন্দনায় মেতে ওঠে । চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ চড়ক।
এ উপলক্ষে এক গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য গ্রামের শিবতলায়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে। চড়ক মেলায় শূলফোঁড়া, বানফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়ক গাছে ঘোরা, আগুনে হাঁটার মতো ভয়ঙ্কর ও কষ্টসাধ্য দৈহিক কলাকৌশলগুলো বর্তমানে কমে গেছে সময়ের পরিবর্তনে।
তবে এখনো পালিত হয় শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্ম। এই দিনে বৈসাবি উৎসব পালন করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো। চৈত্র সংক্রান্তিতে দেশজুড়ে এখন চলছে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব। চৈত্র সংক্রান্তি হালখাতার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠান ও ভূত তাড়ানোর মধ্যদিয়ে উদ্যাপিত হবে।
গত দুই বছর করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পহেলা বৈশাখসহ সবধরনের জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে কোনো অনুষ্ঠানও ছিল না। তবে এবার অনেকটা করোনামুক্ত পরিবেশেই চৈত্র সংক্রান্তি এবং বাংলা নববর্ষ পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবার ছায়ানটের অনুষ্ঠানসহ বর্ণিল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
বিএনএনিউজ২৪.কম/এনএএম
Bnanews24 অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন