বিএনএ, ঢাকা: চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন তিনি। যোগ দেবেন এক লাখ রোহিঙ্গার গণ ইফতারে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেল পাঁচটায় ঢাকায় আসবেন তিনি। বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা গুতেরেসের এই সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণ ও প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির ওপর জোর দেবে বাংলাদেশ।
সূত্র জানায়, জাতিসংঘের মহাসচিব হওয়ার আগে থেকেই বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে অবগত আন্তোনিও গুতেরেস। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে গিয়েছিলেন। প্রায় ৭ বছর পর এবার ভিন্ন বাস্তবতা ও পরিবর্তিত বাংলাদেশে ৪ দিনের সফরে আসছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক শাহাব এনাম খান বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরে আলোচনার কেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ইস্যু। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার বিষয়টি জোর দেবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কতটা জরুরি তাও জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।
আজাদ মজুমদার বলেন, ‘আমরা আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে এক লাখ রোহিঙ্গা ইফতারে যোগ দেবেন। এই ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্যে। পরদিন শনিবারও জাতিসংঘের মহাসচিব একটি কর্মব্যস্ত দিন কাটাবেন। তিনি সকালে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। তারপর দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি সেদিন সংবাদ সম্মেলনেও বক্তব্য দেবেন। সেদিনই জাতিসংঘের মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও রাতের খাবারের আয়োজন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব যোগ দেবেন। পরদিন তিনি বাংলাদেশ ছাড়বেন।
শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সফর। বাংলাদেশে এটি তাঁর দ্বিতীয় সফর হবে। ২০১৮ সালে তিনি একবার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকার বিশ্বাস করে, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে। সরকার আশা করে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব একটি ভালো বার্তা দেবেন।
এছাড়াও, রোহিঙ্গা ইস্যুর পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে ।
বিএনএনিউজ/ আরএস/শাম্মী